পায়ে পায়ে আমরা নিচে নেমে এলাম। তখন রাত একটা। তুমি তোমার ঘরের দরজা বন্ধ করলে। আমি কিছুক্ষণ বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলাম । সকাল সাতটায় মুস্তফা আসবে। আমাদের গাইড। নিউইয়র্ক থেকে ওর সাথে যোগাযোগ করেছিল আমার ছেলে। বলেছিল, আব্বু, এই ট্যুর গাইডের রিভিউ ভাল। ফাইভ স্টার। তোমাকে কিছু ভাবতে হবেনা।
না ভাবা টা আমার পক্ষে অস্বাভাবিক। মুস্তফা টাকা পয়সা নিয়ে আমাদের সাথে কোন চুক্তি করেনি। কাজেই তার দায় দায়িত্ব কত টুকু আমার জানা নেই। যদি সে সকালে না আসে তাহলে পরবর্তীতে আমাদের কি করনীয় এই সব ভাবতে ভাবতে রাত টা পেড়িয়ে গেলো। তোমাদের কে বলেছিলাম ঠিক সকাল সাতটায় নিচে নামতে। দুই রাত কাটাব বাহিরে। ফিরে এসে আবার এই খানেই উঠব। সেই ভাবে দুই একটা জামা কাপড় আর ঔষধের ব্যাগটা নিয়ে নিচে নেমে এলাম সাতটার আগে। তোমাদের দরজায় টোকা দিয়ে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম, সাত টা বাজতে বেশি দেরী নেই।
তোমরা সবাই নেমে এলে। কাউন্টারে জিজ্ঞাসা করলাম, মুস্তাফা নামে কেউ কল করেছিল কিনা।
আমার মনে আছে সে কি বলেছিল। বলেছিল, মুস্তাফা বাহিরে দাড়িয়ে আছে। তুমি দরজাটা খুললে। সামনে দাঁড়ানো, ছয় ফুটের কাছাকাছি, খোঁচা খোঁচা দাড়ি, তোমার ছেলের বয়সই এক জন। হাসি দিয়ে এগিয়ে এলো। বলল, আমি মুস্তফা। তোমাদের গাইড। প্রথম দর্শনেই ওকে আমার ভাল লেগেছিল। ও এসে ভাবীর আর ভাইয়ের সুটকেস দুটো হাতে নিয়ে বলল, আমাকে অনুসরণ কর। অলিগলি পাড় হয়ে এসে পৌছালাম বড় রাস্তায়। ওখানে ওর মাইক্রবাস দাঁড়ান। একে একে সবার সুটকেস ব্যাগ গুলো উঠিয়ে নিলো পিছনে। তুমি জিজ্ঞাসা করলে নাস্তা কোথায় করব। সে বলল, এক ঘণ্টার মত যদি অপেক্ষা করতে পারো তবে আমরা অ্যাটলাস পাহাড়ের উপরে এক রেস্টুরেন্টে নাস্তা করব। ওখান থেকে মনোরম দৃশ্য দেখবে, যা তোমাদের চোখ জুড়িয়ে যাবে। আমরা রাজি হয়েছিলাম।
ভোরের মারাকাস। দোকান গুলো রাতের ব্যবসা শেষ করে এখনও ঘুমন্ত। রাস্তায় গাড়ির চলাচল কম। হৈ হৈ শব্দ নেই। আমরা পেড়িয়ে এলাম মারকাস শহর। চারি দিকে খেজুর গাছের সারি। দূরে পাহাড়। সকালের নরম রৌদ টা পাহাড়ের চুড়ায় ঝলমল করছে। কোথা থেকে কত গুলো নাম না জানা পাখি উড়ে গেলো। ক্রমেই বড় রাস্তা টা ছোট হয়ে এলো। পাহাড় এগিয়ে এলো আমাদের কাছে। মুস্তাফা বলল, এই অ্যাটলাস পাহাড়। চারি দিক জুড়ে।
সমীতা, তুমি বসে ছিলে সবার পিছনে। মাঝে ভাই ভাবী আর শম্পা। মুস্তাফার পাশে আমি। আস্তে আস্তে মনে হোল আমাদের কে পাহাড়টা ঘিরে ফেলছে। বিশাল উঁচু পাহাড়ের মাঝে মাঝে বসতি। মুস্তফাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ঐ পাহাড়ের মাঝে ওরা যায় কি ভাবে? বলেছিল,নিচের থেকে উঠার রাস্তা আছে। যায় গাধার পীঠে চড়ে। সবুজ পাহাড়ের পাশে পাথরের পাহাড়। অপূর্ব। মনে আছে সমীতা, তুমি বলে উঠেছিলে, আহ! আল্লাহর কি মহিমা। চোখ জুড়ান দৃশ্য।
গাড়ী এসে থামল রেস্টুরেন্ট চেগরউনিতে। অ্যাটলাস পাহাড়ের উচ্চতা ৪১৭৮ মিটার। আমরা তার মাঝ খানে। শম্পা আমার হাতে টান দিয়ে বলল, এসো এখানে, যেখান থেকে নিচে তাকালে মাথা ঘুরে আসে। খাদ নেমে গেছে। আমার বিভিন্ন পজে ছবি উঠিয়ে দাও। তুমি জোরে বলে উঠে ছিলে, অত পাশে যেওনা। আমি তাকিয়ে দেখেছিলাম তোমার সেই ভয়ার্ত চাহুনী। আজও চোখে ভাসে।
থাক সে কথা। তুমি আর শম্পা বড় বাড়াবাড়ি আরম্ভ করেছিলে ছবি তোলা নিয়ে। আমি দেখছিলাম পাহাড়ের মাঝে মাঝে বন্য ফুলের সমারোহ।
মুস্তফা এসে বললও, তোমরা সবাই দাড়াও আমি ছবি উঠাই তোমাদের।
নাস্তা শেষে আবারও চলা শুরু।
এবার আমাদের গন্তব্য স্থান Kasbah ( cinema village)। লাল রঙ এর ইটের তৈরি সব বাড়ী । রুক্ষতা ঘিরে আছে চারিদিকে। সূর্য আমাদের মাথার উপর। মাঝে মাঝে হাওয়া বইছে। মুস্তফা বলেছিল, Kasbah Toourirt এর কথা। এটা হচ্ছে সবচেয়ে সুন্দর, সবচেয়ে পুরাতন বাড়ী Quarzazate এ । সূর্যের তাপে শুঁখানো মাটি আর ক্ল্যে দিয়ে তৈরি। এই বাড়ী টাকে ঘিরে তৈরী হয়েছিল বিখ্যাত ছবি,Lawrence of Arabia, Gladiator,Cleopatra. আমাদের গাইড নিয়ে এলো এক উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে। বলেছিল, এই খানে Gladiator ছবির লড়াইয়ের শুটিং হয়েছিল। সেই সব ছবির কিছু কিছু দৃশ বিভিন্ন দেয়ালে গাঁথা। হাটতে হাটতে আমরা ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত। মুস্তাফা নিয়ে এলো এক মাটি দিয়ে তৈরী হোটেলে। আমরা বসলাম। ডাণ্ডা পানীয় এনে দিলো। ঘামে ভেজা মুখটা মুছে নিলো সবাই। সজন ভাই দেখতে থাকল মেন্যু টা।
মুস্তাফাকে তুমিও ভুলতে পারোনি, আমিও না। ভদ্র, মার্জিত একটা ছেলে। আমাদের সাথে মিশে গিয়েছিল। ঠোটের কোনের হাসিটা আমি আজও ভুলিনি। হঠাৎ সে আমাদের বাংলা কথা শুনে বলেছিল, এই ভাষা আমার কানে বাজে। প্রথমে বুঝতে পারিনি কি সে বলতে চাইছে। সোজা হয়ে বসে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কি বলছ?
আমার দিকে তাকিয়ে বলল, আমার ফীয়ান্সে ছিল বাংলা দেশের, নাম ছিল রাবেয়া।
আমরা সবাই নড়েচড়ে বসলাম। কোথায় দেখা হয়েছিল? ভাবীর প্রশ্নের জবাবে বললও,
মারাকাসে।
কিভাবে?
তোমাদের মতোই সে এসে ছিল ট্যুরে। থাকতো লন্ডনে। বাবা মার সাথে। শ্যামলা গায়ের রঙ হলে কি হবে, দেখতে ছিল অপূর্ব। ওর সাথে ছিল আরও চার জন মেয়ে। ওদের কে নিয়ে তিন দিন আমি বিভিন্ন জাগায় ঘুরেছি। ওর সাথেই কথা হতো আমার বেশি। কথার সাথে সাথে জড়িয়ে পড়লাম আমরা দুজন। ফিরে যাওয়ার দিন সে বলেছিল, এই আমার ফোন নাম্বার, কল করো। আমি আসব আবার এই মারাকাসে।
কথা হতো প্রতিদিন। সে তার কথা রেখেছিল।
রাবেয়া এসে ছিল ছয় মাস পর। ওর মা বাবা কে নিয়ে। আমাদের বাড়ীতে।
তারপর? জিজ্ঞাসা করেছিল সজন ভাই।
তারপর, আমার যেমন বাবা মা কে রেখে লন্ডনে যাওয়া সম্ভব নয় তেমনি ওকেও বাবা মা র কাছা কাছিই থাকতে হবে। বলেছিলাম নাই বা হোল বিয়ে। বাবা মা কে কষ্ট দিয়ে লাভ কি? বন্ধুত্বই হোক আমাদের বন্ধন।
তাই বিয়ের পর্ব ওখানেই শেষ। আমরা বন্ধু হিসাবেই থেকে গেলাম, আজও আছি।
ওর কি বিয়ে হয়েছে? শম্পার প্রশ্নের উত্তরে মুস্তাফা বলেছিল, বিয়ে হয়েছে, স্বামী নিয়ে এসেছিল এখানে। আমিই ওদের কে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখিয়ে ছিলাম মারাকাস শহর।
তাই হবে, বলে তাকিয়ে ছিল তোমার দিকে, একটু থেমে বলল, আমাদের Dade George এ যেতে রাত হয়ে যাবে মনে হয়। ওখানে আমরা রাত কাটাব। সন্ধ্যার আগে পৌছাতে পারলে ভাল।
Dade george. সাপের মতো আকাবাকা রাস্তা। চিকন রাস্তার দুই পাশে বিশাল পাথরের পাহাড়। মনে হচ্ছে রাস্তা টাকে গিলে খাবে এই george.
পাহাড়ের গায়ে কে যেন তার হাতুড়ি বাটাল দিয়ে মনের মতো করে তৈরী করেছে বিভিন্ন ধরণের মূর্তি।
মাঝে মাঝে একটা পাথরের উপর আর একটা পাথর দাঁড়ান। ধাক্কা দিলেই পরে যাবে, অথচ তা হবার নেই। এই দৃশ দেখে আমরা mesmerized, আমরা hypnotized.
পড়ন্ত সূর্যের আলো এসে পড়েছে পাহাড়ের চুড়ায়, তার সারা গায়ে। ছড়িয়ে দিয়েছে লালচে আভা দুই পাহাড়ের মাঝ খানে। পাহাড়ের মাঝে মাঝে যেন আগুনের খেলা।
আস্তে আস্তে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। সেই আলোর ঝলকানি আর নেই। শুধু অন্ধকার। এই অন্ধকারকে মুস্তাফা এড়াতে চেয়েছিল। পারলনা। একেবেকে আমরা উপরে উঠছি আবার নিচে নামছি। গাড়ীর আলোতে পথ দেখা। মুস্তাফার পাকা হাত। কখন বায়ে কখন ডানে ঘুরাচ্ছে। দুই পাশে খাদ নেমে গেছে। কোন বাধন নেই পাশে।
দেখেছি আলো, দেখলাম মিশমিশে অন্ধকার। মনে পড়ল, কে যেন লিখেছিল, অন্ধকারের ও রুপ আছে। মাঝে মাঝে কিসের আওয়াজ পাহাড়ে বারি খেয়ে আমাদের কানে এসে পৌছাচ্ছে। সবাই চুপ। ঘণ্টা পেড়িয়ে গেলো। আমরা অবশেষে এসে পৌছালাম পাহাড়ের গায়ে ঘেঁষা হোটেলে।
হোটেল টা ছোট হলেও সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো। শুধু একটাই অসুবিধা হয়েছিল। তোমার রুমটা আমাদের থেকে দূরেই পড়েছিল। তোমার ভাল লাগেনি। সেটা আমি তোমার মুখ দেখেই বুঝে ছিলাম। কিন্তু কি করবে বলও।
পরদিন ভোরে বাহিরে এসে দেখলাম তুমি দাড়িয়ে আছো বারান্দায়। তাকিয়ে আছো সামনের পাহারটার দিকে। যেখান থেকে ক্ষীণ একটা পানির রেখা নিচে নেমে আসছে। সত্যিই অপূর্ব। আলোর সাথে মিলিয়ে তোমার পরনের সাদা outfit টা অপূর্ব লাগছিল।
এখনো মনে রেখেছ দেখছি?
শুধু তাই না, তারি সাথে মিলিয়ে তোমার সাদা স্যান্ডেল, যেটা আমারই পছন্দে কিনেছিলে। আছে কি সেটা?
আছে। থাক, পুরন কাসুন্ধী ঘেঁটে লাভ কি? বলও, তারপর, আমাদের যাত্রার কথা।
নাস্তা সেরে বাহিরে এসে দাঁড়ালাম আমরা সবাই। ডাণ্ডা প্রচণ্ড না হলেও, মন্দ না। চারিদিকে লোকের বসতি আছে বলে মনে হোল না। জিজ্ঞাসা করতেই হোটেলের ম্যানেজার বলল, আছে, একটু ভিতরে।
সামনের পাহাড়ের উপরে একটু বারান্দা করা। পাশের সিঁড়ি বেয়ে উঠা যায়। শম্পা দেরী করেনি। তড়তড় করে উপরে উঠে ডাক দিল আমাকে, “ছবি উঠাও, সম্পূর্ণ পাহাড়টা যেন উঠে”।
ওর আবদারের অন্ত নেই।
সকাল সকাল বেড়িয়ে পড়লাম। পথে থামবো Todra Gorge এ। মুস্তাফা বলেছিল, Todra Gorge যদি না দেখো তাহলে পৃথিবীর অনেক সৌন্দর্যের এক সৌন্দর্য তোমার জীবনে দেখা হলনা। আকাবাকা পথ বেয়ে আমাদের যাত্রা আবার শুরু।
Tinerhir থেকে নয় মাইল দুর Todra Gorge। আমরা এসে পৌছালাম ৬৬ ফুট উন্মুক্ত Todra Gorge এর ঢোকার পথে। শো,শো শব্দ। নিচে বয়ে যাওয়া পানির স্রোত। চারিদিকে ঘেরা হাজার ফুট উচু limestone এর পাহাড়। তার উপরে পড়েছে সূর্যের আলো। সোনালী রঙ ধারণ করে দাড়িয়ে রয়েছে। আর আমরা মুগ্ধ। চেয়ে চেয়ে দেখছি।
তুমি বলেছিলে, It’s breathtakingly beautiful. অনেক ছবি আমরা উঠিয়ে ছিলাম। শম্পার বিভিন্ন পজের ছবির অভাব নেই।
মাত্র আধা ঘণ্টা সময় আমরা পেয়েছিলাম। মন ভরে নি।
আমাদের তো কিছু করার ছিলনা। Merzouga তে যেতে হবে। রাত কাটাব খোলা আকাশের নিচে।
সূর্য যখন পড়ন্ত সেই সময় আমরা এসে পৌছালাম সাহারার প্রান্তে। জীবনে এই picture perfect মুহূর্ত আবার কখন কোথাও দেখবো কি না জানিনা। তুমি বলেছিলে, দেখো, চারিদিক লালচে রঙ এর বালির সমুদ্র। ধুধু মরুভূমি। সূর্যের আলো থমকে দাড়িয়ে গেছে। পথ পাচ্ছে না কোথায় যাবে। হারিয়ে গেছে রঙ এর বালির মাঝে।
The Sahara is the most beautiful, enigmatic and awe-inspiring natural wonder, আমরা উপভোগ করেছিলাম। পাঁচ জন পাঁচটা উটের পিঠে। এক সারীতে। ভাবী বলেছিল, আমি পারবো তো?
হেলে দুলে উট গুলো এগিয়ে চলেছে। কখন নিচে নামছে কখন উপরে উঠছে। যেদিকে চোখ যায় শুধু বালি আর বালি। কোথাও উচু, কোথাও সমতল।
উটের পিঠে চড়ে দের ঘণ্টা পথ পাড়ি দিয়ে আমাদেরকে পৌছাতে হবে তাবুতে। আমি ছিলাম সবার পিছনে। তুমি তার পরে। সজন ভাই সবার আগে।
সূর্য ঢলে পড়েছে পশ্চিমে।
আমরা দাঁড়ালাম। উটদের কে রেস্ট দিতে হবে।
বালির সমুদ্রে অস্তগামী সূর্যের আভা মোহনীয় পরিবেশ তৈরী করেছিল। পশ্চিমের আকাশ লাল। সেই লাল রঙ এসে পড়েছে লাল বালিতে। মনে হোল যেন আগুন জ্বলছে।
তারপর নেমে এলো অন্ধকার । আমরা আবার উটের পিঠে বসলাম।
তাবুতে এসে দেখলাম আরও কিছু লোক আমাদের আগেই এসে গেছে। রাতের খাওয়া হবে খোলা আকাশের নিচে।
আমাদেরকে আনন্দ দেবার জন্য হবে কাম্প ফায়ার। ওরা গাইবে ওদের গান।
আমি ও এলাম। মিসকালো অন্ধকার চারিদিকে। আকাশে অগণিত তারার মেলা, মিটমিট করে জ্বলছে। তুমি শুয়ে পড়লে বালিতে। তাকিয়ে থাকলে আকাশের দিকে। বললে, এ সৌন্দর্য আমি কাউকে বলে বোঝাতে পারবনা। এ সৌন্দর্য শুধু নিজের চোখে দেখতে হয়, অন্যের চোখে নয়।
রাত কয়টায় আমরা তাবুর মধ্যে গিয়েছিলাম, মনে আছে? দুইটা। মাঝে মাঝে উট গুলো ডাকছিল। মনে হচ্ছিল কাঁদছে। তুমি বসলে আমার পাশে। বললে, দেখা হোল, তোমার অনেকদিনের আশা পূর্ণ হোল। ভাই ভাবীরা চলে গেছে। শম্পাও ঘুমানোর পথে। তোমার তাঁবুটা এবার আর দূরে নয়, আমাদের কাছেই।
চলো।
পরদিন মুস্তাফা এসেছিল কাক ডাকা ভোরে। তার গাড়ী নিয়ে। এসেছিলাম উটের পিঠে, ফিরে এলাম গাড়ীতে। নাস্তা শেষে ফেরার পালা। যা দেখলাম তা শুধু নিজের ভাণ্ডারেই সঞ্চিত করে ফিরে এলাম মারাকাসে।
আরও দুদিন পরে মুস্তাফা আমাদেরকে নামিয়ে দিয়েছিল এয়ারপোর্টে। বলেছিল, তোমরা আবার আসবে,আসবে আমার বিয়েতে।
শম্পা আমার কাছে এসে বলেছিল, Thank you, তুমি তোমার কথা রেখেছ। এর পরের বার আমরা কোথায় যাবো?
তোমার সাথে ওটাই ছিল শেষ ভ্রমণ। কি হোল? ওদিকে মুখ ঘুরিয়ে আছো কেনও?