টেগোর কামরুল আলম। তুমি যেদিন এলে, সেই মুহূর্তে আকাশ থেকে সাদা সাদা পেঁজা পেঁজা বরফ ঝরে ঝরে পড়ছিল। বাতাসের শব্দ আমার কানে এসে বাজছিল। কে যেন আমাকে বলছে, যাবে না দেখতে? আমি তাকিয়ে দেখছিলাম সাদা হয়ে যাওয়া রাস্তাটার দিকে। ঝাপসা হয়ে এলো চোখের দৃষ্টি, আমি আর কিছু দেখতে পেলাম না।
শুধু তাঁর কণ্ঠস্বর।
যাও, দেখে এসো।
আমি দেখে এসেছি। কথা বলেছি মনে মনে।
ছোট, ছোট হাত, পা ছুড়ে সে তাঁর অস্থিত ঘোষণা করছে। আমি হাত দিয়ে ছুঁতে পারিনি। কোলে নিয়ে বুকের মাঝে চেপে ধরতে পারিনি।
বলতে পারিনি, কতদিন আমি তোর আশায় বসেছিলাম,
তোকে নিয়ে কত স্বপ্ন আমি দেখেছিলাম। আমাকে তুই চিনতে পারবি শুধু ছবির মাঝে।
তোর আমার ছবি কোথাও থাকবে না, থাকবে শুধু তোর মনের মাঝে।
আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম,পারবি না আঁকতে সেই ছবি?
মনে হোল সে বলছে সে পারবে । ওর নামই তো বলে দিচ্ছে ও পারবে।
আমি বলেছি, আমাকে তুই বিভিন্ন ভাবে তোর মনের মতো করে সাজাবি। বিভিন্ন ভাবে তোলা আমার ছবি পাবি তোর দাদার কাছে। ওখান থেকে বেছে নিবি সবচেয়ে ভাল, সুন্দর ছবি টা।
তোর দাদা বলতো আমার সব ছবিই নাকি খুব সুন্দর। ওর কথা শুনবি না। ও সব কিছুই একটু বাড়িয়ে বলত।
তুই বেছে নিবি তোর সবচেয়ে পছন্দের টা।
তারপর, তারপর আমি আর তুই।
কল্পনায় পারবি না, আমার হাত টা তোর হাতের মুঠোয় ধরে সমুদ্রের পাড়ে হাটতে।
বলতে পারবি কি আমি তোর মাঝে রয়েছি, থাকব অনন্ত অনন্ত কাল ধরে।
তুই অনেক বড় হবি, তোর নাম যশ ছড়িয়ে পড়বে। তখনও তুই আমায় তোর মনের মাঝে রাখবি তোঁ ?
শুধু তোমায় বলি, একদিন ওকে দেখিয়ে এনো আমার জন্ম স্থান টা। দেখিয়ে এনো সেই জাগাটা, যেখানে তুমি প্রথম আমার হাতে হাত রেখেছিলে। যেখানে বসে আমরা গল্প করতাম, সেই গাছতলা টা। সেই রাস্তা টা যার পরে কত স্মৃতি জড়ান তোমার আমরা। গল্প করে বলও তোমার আমার কথা।
ওকে তুমি প্রথম যখন কোলে তুলে নেবে, আমার হয়ে চুমো দিও। কানের কাছে মুখ নিয়ে আমার নাম টা বলও।
আমি রইলাম তোমাদের মাঝে।
আলম? আলম?
হোয়াট?
সামবডি অয়ান্টস টু টক উঈথ উ।
তাল টা কেটে গেলো। আমি ফিরে চাইলাম। ভিজে যাওয়া চশমাটা মুছে নিলাম।