জাপানের পথে ২

সন্ধ্যা ছয়টায় আমাদের প্লেন ছাড়বে । তিনটার সময় আমি আর শান্তা এয়ার পোর্টে পৌছিয়ে গেলাম। বাকি সবাই পাঁচ মিনিটের মধ্যে এসে হাজির।
চেক ইন করে, সিকিউরিটি পাড় হয়ে গেট ৯ এসে পৌঁছাতে বেশি দেরী হলোনা।
ঘন্টা দেড় পরে প্লেন ছাড়বে । না তা আর হলো না। আধা ঘন্টা দেরী হলো।
১৪ ঘন্টার পথ। ইদানিং এতো ঘন্টার পথ মন আর শরীর দুটোকেই পীড়া দেয়।
টেগ এয়ার পোর্টে হাটহাটি করে বেড়াচ্ছিল।
হঠাৎ প্লেনের ছোট্ট জাগায় বন্দি হওয়াতে অস্থির হয়ে উঠল।
টোকিও বিমান বন্দরে যখন নামলাম তখন টোকিওর সময় রাত ৯ টা বেজে বিশ মিনিট।
ইমিগ্রেশন শেষ করে মালপত্র নিয়ে টেক্সি নিয়ে গন্তব্য স্থানে পৌঁছাতে রাত সাড়ে এগারটা বেজে গেলো।
ভোরে যেতে হবে টোকিও ট্রেন স্টেশনে। জাপান রেল লাইন (JR)।
যাবো Kyoto. দুই ঘন্টার পথ।

Railway pass কাটা ছিল ।
নয়টা তিনের ট্রেন ধরলাম।
Kyoto র পথে।

এপ্রিল ৬,২০১৯
ছুচালো মুখের ট্রেনটা ছাড়লো নয়টা তিনে টোকিও রেলস্টেশন থেকে। ধীরে ধীরে তার গতি বৃদ্ধি করে Kyoto র দিকে এগোতে মনে পড়লো বেশ কিছুদিন আগে এই ধরনের ট্রেনে করে গিয়েছিলাম মসকো থেকে সেন্ট পিটার্সবারগ।
আমাদের সাথে টেগর তার যথারীতি মুচকি হাসি দিয়ে সবার কোলে কোলে ঘুরতে থাকল।
এগারো টার কিছু পরে ট্রেন এসে দাঁড়ালো Kyoto স্টেশনে।
ঝকঝকে প্লাটফরম। শনিবারের সকাল ।তবুও লোকের আগমনের কমতি নেই।
ম্যাপ দেখে মনে হলো আমাদের থাকার জায়গাটা খুব একটা দুরে নয়।
দুই একটা রাস্তা পেরিয়ে, দুটো বাঁক নিয়ে এসে পৌঁছালাম বাসার সামনে। পুরোটা কাঁঠের তৈরী। একটু পুরানো।
আমাদের হাতে মাত্র চারদিন । অনেক দেখার,সব দেখা হবে না। ছক কেটে কয়েকটা জাগার নাম লেখা আছে কাগজের পাতায়।প্রথম Nishiki Market.
ছোট্ট গলির মাঝে বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট দোকানে ওরা তৈরি করছে হরেক ধরনের খাবার। লোকে হাটছে খাচ্ছে। কাঠির মাঝে গাঁথা চিংড়ি । সালমন মাছের ফিলে। সুসি।আরও হরেক রকমের খাবার। ভীড় ভীড় আর ভীড় । লোকে লোকারণ্য ।
রাস্তা শেষে এলাম চৌ রাস্তার মোডে।
যেতে হবে Kyomyizu-Dara.

Kyomyizu-Dara, iconic Buddhist temple. Mount Otowaর উপরে।
অপুর্ব দৃশ্য ।
চিকন রাস্তার পাশে বিভিন্ন ধরনের দোকান।
ঐ রাস্তা ধরে আমরা উপরে উঠছি। সবাই কে দেখতে পেলাম না। ওরা হয়তবা উপরে উঠে গেছে।
আমি, শান্তা, আর জীবন। উঠছি উপরে।
গাড়ো লাল রং এর টেমপেল। সুর্যের শেষ আভা এসে পরেছে ওর চুড়ায়। লাল রং ছড়িয়ে পরেছে । অপুর্ব ।
উপরে এসে দেখা পেলাম সবার।

বুদ্ধের মুর্তি। অনেকে ওর সামনে মাথা নত করে দাড়িয়ে । আমরা এগিয়ে গেলাম ওদেরকে পিছনে রেখে।
সুর্যের আলো নিভে এলো।
সাদা চেরী ফুল গাছের ভিতরে আলো জ্বলে উঠলো।
আমরা দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে সেই দৃশ্য উপভোগ করলাম।

এপ্রিল ৭, ২০১৯
ধীরে ধীরে ঢালু রাস্তা বেয়ে আমরা নেমে এলাম টেম্পল কে পিছনে রেখে। শানতনু তাসমিয়া টেগোর কে নিয়ে আগেই চলে গেছে।ঠান্ডা বাতাস এসে ঝাপটা মারছে মুখে। এসে দাঁড়ালাম ট্যাক্সি স্টেন্ড ।

দুই দিন এসেছি এই দেশে। বলতে বাঁধা নেই
এই দুই দিনে মুগ্ধ করলো ওদের ভদ্রতা । রাস্তায় হাটছে, কারো হাতে সেল ফোন নেই।
যে দৃশ্য অহরহ দেখে অভ্যাস। দৃষ্টি তে আঘাত হানলো। যে দৃশ্য দেখে অভ্যাস নেই তা দেখলে আশচার্য হতে হয় বইকি।
বড় শহরের নোংরা রাস্তা দিয়ে হেটেছি। দেখেছি উপচে পড়া গার্বেজ ।
আর এখানে গার্বেজ ক্যান নেই কোনো রাস্তার পাশে। অথচ ছোট গলি থেকে আরম্ভ করে বড় রাস্তা ঝকঝকে পরিষ্কার ।
একেই বলে সভ্যতা।

ভ্রমনের পথে ছোট ছোট কত কিছু চোখে পড়ে , মনকে দোলা দেয়।
ফিরে আসি Fushimi-Inari Tanisha র কথায়, যা দেখতে এসেছিলাম পরের দিন।
এ এক মন্দির ।
সব চেঁয়ে বড় God Inari র মন্দির ।

২৩৩ মিটার উপরে এই মন্দির । অরেনজ রং এর ৫০০০ গেট। একটার পর একটা গেট পাড় হয়ে উপরে উঠে যেতে হবে। চারিদিকে তাকালে দেখা যায় শিয়ালের মুর্তি।
কথিত আছে শিয়াল Inari র ম্যাসেনজার।
আর Imari, God of Rice.

Trail ধরে উপরে উঠে এলাম। সবাই আসেনি।
উপর থেকে ফিরে আসতে আসতে দুপুর হয়ে এলো।
যেতে হবে Tea Ceremony তে ।

Matcha tea ceremony. চা পরিবেশন যে এত সুন্দর হয়, না দেখলে বোঝা যাঁয না।
সুন্দর করে Kemono পড়ে বাউ করে এসে দাঁড়াল আমাদের সামনে। নিয়ে বসালো একটা ঘরে। আসন গেরে বসলাম।
সালাম করার মত মাথা মেঝেতে ঠেকিয়ে অভিনন্দন জানালো।
বলল, এটা আমাদের রিতি। অতিথি কে সমমান জানানো।
চা র কাপটা আলতো ভাবে উঠিয়ে দেখালো কোন টা সামনে কোনটা পিছন দিক। জানা ছিল না কাপের ও সামনে এবং পিছন আঁছে।
সামনে টা থাকবে অতিথির দিকে। অতিথি ওদের কাছে দেব তুল্য।
এই সব ছোট ছোট রিতি আছে ওদের সমাজে।
Ceremony শেষ হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে এলো।
ঝিরঝির বাতাসে হাটতে ভালোই লাগছিল।
কাল যাবো Osaka তে।

এপ্রিল ৮,২০১৯
Osaka তে যাওয়ার আগে Himeji শহর টা দেখবে বলে সবাই রাজি হলো। Kyoto থেকে দেড় ঘন্টার পথ। জাপানের Kansai Region র একটা সিটি। শহরটা বিখ্যাত White Himeji Castle এর জন্য।

সকালের নাস্তা রোজি আর চয়ন ভাবী তৈরি করে নিয়ে এলো। ডিম ভাজি, পাউরুটির সাথে জেলি। মুখরচক।
বিদেশ বিভুয়ে গরম গরম হাতে তৈরি নাস্তা ।
এর চেয়ে বেশি কি আশা করা যায়।

বের হয়ে পড়লাম । সকাল ১০ টায় ট্রেন ।
Himeji র মাটি তে পা দিয়েই দেখলাম কয়েক শত লোক আমাদের আগেই এসে গেছে।
আকাশে নীল মেঘ, নিচে সারিসারি চেরি গাছে গোলাপি, সাদা ফুলে ভরা। তার উপর পডেছে সুর্যের আলো।
অপুর্ব সংমিশ্রণ ।
একে সামনে রেখে দাড়িয়ে আ্ছে পাঁচ তালা White Himeji Castle।
১৩৩৩ সালে এটা ব্যভরিত হতো Fortress হিসাবে, ১৩৪৬ সালে পরিনিত হয় Castle এ।
খাড়া সিঁড়ি বেয়ে আমরা উপরে উঠতে লাগলাম। শান্তনু, তাসমিয়া টেগর কে নিয়ে এত উপরে কি ভাবে উঠবে সেই চিন্তা আমাকে পেয়ে বসল।
সব দেখে নেমে এলাম।একটু বসতেই দেখি শানতনু রা নেমে আসছে।
এবার ফিরে যাওয়ার পালা।
আজ আর সময় নেই লেখার।
উঠি।

এপ্রিল ৯, ২০১৯
Osaka তে সেদিন আর যাওয়া হলো না। বিকেলে আকাশ টা কালো মেঘে ছেয়ে গেলো। ঝিরিঝির বাতাস। তাপমাত্রা কমের দিকে। সেই সাথে ছিটে ফোটা বৃষ্টি ।
শানতনু খুঁজে বের করলো এক সুসি রেস্টুরেন্ট
বসার জায়গা সীমিত। এখানকার অধিকাংশ ছোট ছোট রেঁস্তোরা গুলোতে বসার জায়গা এই রকম। তাই বলে কেউ না খেয়ে চলে যাচ্ছে না। লাইনে দাড়িয়ে আছে।কারন বাহিরে হেটে হেটে খাওয়ার রীতি এদেশে নেই।
প্রত্যেক প্লেটে দশ রকমের সুসি। সামনে বানিয়ে দিচ্ছে । জাপানে এসে সুসি খাবোনা
তা তো হতে পারে না।
বাসায় ফিরতে রাত হলো।

পরদিন Arashyama হয়ে Osaka .
তৈরি হয়ে বের হতে হতে দশ টা বেজে গেলো।
JR Train এ Saga Station নেমে হাটে যাবো Bamboo Forest দেখতে। সেখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে Kinkakuji Temple.

Arashyama, Kyoto র second most sightseeing district. Shrine এবং Temple চারিদিকে।
তবে প্রধান আকর্ষণ হলো Arashyama Bamboo Grove.

সুর্য উজার করে তার আলো ছরিয়ে দিয়েছে সবখানে। ঠান্ডা অতটা নয়। টেগরকে নিয়ে হাটতে হাটতে বাঁশ ঝারের মাঝে এলাম।

বলা যেতে পারে বাঁশ ঝার ? তাও দেখতে হবে?
হবে বৈকি।
Kyoto র সকালে হাজার হাজার বাঁশ , আকাশ ছুঁই ছুঁই, বাতাসে হেলছে দুলছে, ভোরের আলোয় চিকমিক করছে ওদের শরীর, মনে হচ্ছে ওরা একে অপরের সাথে কথা বলছে কানে কানে।
দেখতে হবে বৈকি? অনুভব করতে হবে। সত্যই অপুর্ব।
হাটতে হাটতে এসে দাঁড়ালাম বাগানের শেষ প্রান্তে।
ওখানে ছোট ছোট তাঁবু খাটিয়ে ভাজা হচছে
চিংড়ি মাছ, আগুনে পুড়ানো হচছে ভুট্টা।
শান্তা বলল, খাবে?
বললাম, মন্দ কি?
বাঁধাকপির প্যাটি নিয়ে এলো সে।
রওয়ানা হলাম গোল্ডেন টেমপেল দেখতে।

Kinkaku-ji (Temple of the Golden Pavilion) . ট্যাক্সি করে এলাম। আধা ঘনটার পথ।
গোল্ডেন টেমপেল ছিল Shogun Ashikaga Yoshimitsu এর retirement villa. Yoshimitsu এর মৃত্যুর পর ওর ছেলে বাবার ইচ্ছা কে ব্যস্তবায়িত করে villa কে Temple হিসাবে মননিত করে।

পুকুরের পাড়ে Golden Temple, ওর ছায়া পরেছে পুকুরের পানিতে। রৌদ ঝলমল দিনে অপুর্ব সেই দৃশ্য ।
আমরা কিছুটা ক্লান্ত । এসে বসলাম গাছের নিচে।
যাবো Osaka তে। সবাই যেতে রাজি নয়।
আমরা ছয় জন বেরিয়ে পড়লাম।
JR ট্রেনে ৪ টা স্টেশন পরেই Osaka. ভুল হবার সম্ভবনা আছে স্টেশন নিয়ে। কারন তার আগের স্টেশন টার নাম Shin- Osaka.
ভুল হতে পারে তাই বারবার বলা হচ্ছে পরের স্টেশন Osaka.
শানতনু বার বার বলল ঐখানে পৌছিয়ে আমাকে text করো। চিন্তা তার বাবা যদি হরিঁযে যায়। বললাম, আব্বু, চিন্তা করোনা ।
স্টেশন নেমে Information এ Osaka Castle র কথা বলতেই ম্যাপে দেখিয়ে দিলো কিভাবে যেতে হবে। তবে বনধ হয়ে যাবে ৪:৩০ এ । হাতে আঁছে আধা ঘন্টা।
সমঁয মত পৌঁছানো গেলো না। শুধু বাহিরের থেকে দেখা।
শানতনু বলে দিয়েঁছে neon- lighted Dotombori তে যেও। ওখানে রাতের খাওয়া খেয়ে নিও।
পাতাল ট্রেনে বেশ কিছু পথ। কয়েকটা ট্রেন পাল্টিয়ে যেতে হবে। পেয়ে গেলাম এক young couple. ওরাও ঐ পথে যাবে। এসেছে Vancouver থেকে। ওদের কাছে আছে ট্রেনের ম্যাপ। কাজেই অসুবিধা হলো না।
Dotombori, আলোয় আলোকিত। লোকে লোকারণ্য। জমজমাট ।
আমরা ছয় জন হাটছি। ছবি তুলছি। ছোট ছোট রেস্তরাঁর সামনে দাড়িয়ে দেখছি কোথায় খাওয়া যেতে পারে।
পাওয়া গেলো ৯ তালার উপর । শান্তা অর্ডার দিলো। খাবার একটার চেয়ে একটা অমৃত।
খাওয়া শেষে ফিরে এলাম ট্রেন স্টেশনে।
তখনই চয়ন আপার বিয়াই বলে উঠল, আমার iPhone রেখে এসেছি।
অগত্যা আমি আর বিয়াই বেরিয়ে এলাম।
রেস্টুরেন্টে পৌঁছাতে ওরাই বলল, iPhone, iPhone?
হারাবে না , আগেই জানতাম।
সবকিছু দেখে ফিরে এলাম বাসায়। ঘড়ি তে ১১ টার ঘর পেরিয়ে গেছে।
কাল যাব টোকিও তে।

এপ্রিল ১০, ২০১৯

দুপুর ১২ টার ট্রেনে যাবো টোকিও তে। সকাল থেকে আকাশ মুখ গোমরা করে আছে। বৃষ্টির সাথে বাতাস। বেশ কিছুটা পথ হেটে ট্রেন স্টেশনে যেতে হবে। কিছু করার নেই।
বেশ কয়েকটা ছাতা আছে । তাই মাথায় দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।
১১ নম্বর প্লাটফরম থেকে Shinkansen ( Bullet train) টা ছাড়ল টোকিওর দিকে।
২০০ মাইল বেগে চলছে। গাছ পালা বাড়ী ঘর চোখের পলকে পিছনে চলে যাচ্ছে ।
দুই ঘন্টার কিছু উপরে টোকিও স্টেশনে এসে পৌঁছালাম।
আমি চারিদিক তাকিয়ে দেখছি স্টেশনের পরিচ্ছন্নতা। টোকিও স্টেশন পৃথিবীর মধ্যে একটা ব্যস্ততম স্টেশন। কিভাবে সম্ভব এই রকম পরিস্কার রাখা।
কারো হাতে খাবার আমি দেখিনি।দেখিনি সিগারেট জ্বলতে ।

এখানেও বৃষ্টি ।
আমাদের airbnb Shinjuku তে। ট্যাক্সি করে এলাম ।
বাসাটা গলির ভিতরে। ছোট বাসা। দুই তালা।
শুনেছি জাপানের সব বাসাই ছোট।
তবে মন্দ নয়। ছয়টা শোবার রুম। বসার জায়গা আছে । আছে রান্না ঘর, আছে দুইটা বাথরুম।
Shinjuku, কথা ছিল আজ ঘুরে বেড়াব এই খানে।
হলো না।,
বৃষ্টি।
সন্ধ্যায় এক seafood রেঁস্তোরায় ডিনার খেতে যাওয়ার কথা। নাম Kaikaya by the sea.
টোকিওর Shibuya district এ।মডার্ন জাপানিজ রেঁস্তোরা । বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এলাম। রিজারভেশন থাকাতে ওরা টেবিল রেডি করে রেখেছিল।
সুহাইয়া, শানতনু মিলে বিভিন্ন ধরনের মাছ. সুসির অর্ডার দিলো।
অমৃত ।
পরিচয় হলো আমাদের দেশের তিন জনের সাথে। ওরা কাজ করে রাতে। দিনে কলেজে যায়। কথায় বলে বিদেশে বাংগালি স্বজন ।
ওদের আন্তরিকতা মুগ্ধ করলো।
খাওয়া শেষে বাসা।
পরদিন itinerary তে আছে National Garden, Halal Ramen, Shibuya Crossing, আর কেনাকাটা।
বাসায় এসে আড্ডাতে বসলাম । আমরা তিন জন।
অন্যরা যে যার মত ঘরে চলে গেল।

এপ্রিল ১১, ২০১৯

সাকুরা, জাপানের Cherry Blossoms কে বলে সাকুরা। দুর দুরান্ত থেকে লোকেরা আসে এই সাকুরা দেখার জন্য। মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি গোলাপি ফুলের আচ্ছাদনে ঢাকা থাকে এই দেশ।
আমরা দেখলাম। ক্যামেরায় ধরে রাখলাম এই অপুর্ব দৃশ্য ।

সকালে উঠে শান্তা জিগগাসা করল, আজ কোথায় কোথায় যাবো বলত?
কেবল তো এসে পৌছিয়েছ টোকিও তে, অনেক কিছু দেখার মাঝে আজ যাব, National Gardenএ, খাবে হালাল Ramen, দেখবে Shibuya Crossing, কিছু কেনা কাটি করবে কি?
ইচ্ছা আছে।
তবে তাও হবে।
ও চলে গেল সাজতে গুঁজতে ।
Airbnb র এই একটা সুবিধা, রান্নাঘর আছে, আছে রান্না করার পাত্র। সকালে পাউরুটি, ডিম, জেলি আনা হলো। কফি আর দুধ নিয়েছিলাম আমি, জিবু এনেছিল চা আর চিনি।
রোজি বিয়াইন, চয়ন আপা মিলে তৈরি করল
অমৃত কর নাস্তা ।
আহা।
বের হতে হতে দশ টা বেজে গেলো। সুন্দর ঝকঝকে রৌদ, তাপমাত্রা ৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইট । কে বলবে গতকাল বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়া মাথায় করে এসেছিলাম।
যেখানে আছি সেখান থেকে কেনা কাটা করার দোকান গুলো খুব একটা দুরে নয়।
অলি গলি পেরিয়ে এলাম । দোকান খুলবে আরো দশ মিনিট পরে।
আমার আর শানতনুর কেনাকাটা করার কিছু নেই।
টেগোর কে নিয়ে আমি আর শানতনু রাস্তা পেরিয়ে এলাম Starbucksএ।
১২:৩০ মিনিটে নিদৃষ্ট জাগায় মিলিত হবো সবাই।
টেগোরকে ছেড়ে দিলাম বিরাট সান বাঁধান চত্তরে। সে ছাড়া পেয়ে হাঁটি হাঁটি করে ঘুরতে লাগলো চারিদিকে।
সময় পেরিয়ে গেলো।
আমি আর শানতনু হাতে কফি নিয়ে রাস্তায় নেমে এলাম। হাটতে হাটতে চলেছি । মাঝে মাঝে সিপ দিচ্ছি কফির কাপে। ঠিক সেই মুহুর্তে লক্ষ করলাম শুধু আমাদের দুজনের হাতেই কফির পেয়ালা।
রাস্তায় হাটতে হাটতে খাওয়ার রিতি এখানে নেই।
So embarrassing.

সবাই কিছু না কিছু কিনেছে। শুধু আমরা দুজন ছাড়া ।
কাছেই Tokyo Tower. বললাম চল ঘুরে আসি।
উপরে Observatory tower থেকে দেখলাম
Panoramic view of Tokyo.

এবার আমাদের যাওয়ার কঁথা হালাল Ramen খেতে। অনেকেই হয়ত জানেন Ramen কি। তবুও বলি । Ramen
জাপানিজ ডিস। সাধারণত নুডুলের সাথে Pork এর broth আর উপরে ছড়িয়ে দেয় porkএর টুকরা।

এই রেঁস্তোরার (Halal Ramen Ouka) র মালিক মুসলমান। বৌ, মেয়ে আর নিজে মিলে তৈরি করে হালাল Ramen । pork এর পরিবর্তে বিফ অথবা মুরগির broth.

এই রেঁস্তোরার নাম আছে মনে হলো। আমরা এসে দাঁড়ানোর পরপরই অনেকে এসে লাইনে দাঁড়াল। ভিতরে জাগা কম।
আমরা বসার পর দরজায় “ভর্তি “ সাইন লাগিয়ে দেওয়া হলো। অন্যান্য রা দাড়িঁযে রইল।
হাসি মুঁখে।

তৃপ্তি করে খেয়ে সবাই বেরিয়ে এলো। ন্যাশনাল পার্ক খুব একটা দুরে নয়। হাঁটা পথ। পার্কের সব গাছে এখন সবুজ পাতা আসেনি।তবু মন্দ নয়।
দেখা শেষে তাসমিয়া টেগোর কে নিয়ে চলে গেলো বাসাতে।
ছোট্ট “কিউটি পাই “ টা ক্লান্ত।

আমরা রওয়ানা দিলাম Shibuya Crossing দেখতে।
Shibuya Crossing. ব্যাখ্য না করে পারছিনা ।
চার টা রাস্তা মিলেছে এক জাগায়। চার রাস্তার ট্রাফিক লাইট একসাথে নিল থেকে লাল হয়। আর হাজার হাজার লোক পাড় হয় একই সময়ে। পৃথিবীর কোন দেশে এক সাথে এমন ভাবে লোক পাড়া পাড় হয় না।
আমরা JR ট্রেন নিয়ে এসে দাঁড়ালাম চৌরাস্তার মোড়ে। হাজার লোকের মাঝে আমরাও পাড় হলাম ঐতিহাসিক Crossing.

ঐখানে আঁছে এক কুকুরের মুর্তি ।
এর এক কাহিনি আছে।
কুকুরের নাম Hachiko. প্রতিদিন সে তার মালিক, প্রোফেসরের সাথে আসত স্টেশনে।
মালিক কাজে চলে গেলে সে বসে থাকত ঐখানে যতক্ষন না তার মালিক ফিরে আসত।
এই সুন্দর রুটিন একদিন অস্বাভাবিক ভাবে শেষ হলো, যেদিন হঠাৎ করে কাজে প্রফেসার মারা গেলো Heart attack এ। এই ঘটনা ঘটেছিল ১৯২৫ সালে।
Hachiko ঐখানেই বসেছিল, দেখত ট্রেন আসছে, যাচ্ছে আশা করত তার মালিক আসবে। দেখা হবে । কিন্তু তা আর হলো না
এমনি ভাবে দশ বছর কেটে গেল।
একদিন এই অপেক্ষার অবসান হলো।
১৯৩৫ সাল ।
Hachiko তার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলো ঐখানে।
খুব করুন কাহিনি। তাই না?
আগামি কালের কাহিনি আগামি কাল বলব।

এপ্রিল ১২,২০১৯

আজ আমাদের কর্মসুচি তে রয়েছে যে যার মতো বেরিয়ে পরো।
চয়ন আপা, বিয়াই বিয়াইন, জীবন কে নিতে আসবে চয়ন আপার জানা একজন। সারাদিন ওর কাটাবে তাদের সাথে।
শানতনু রা যাবে Hakone র Hot Spring এ। বাদ বাকি রয়ে গেলাম আমি আর রুমা আপা।
ঠিক হলো আমরা যাবো Lake Ashi দেখতে। আবহাওয়া ভাল থাকলে MT. Fuji দেখা যেতে পারে।

সম্ভবনা কম। আকাঁশ মেঘলা।
নাস্তা শেষে চয়ন আপারা চলে গেল ওদের গন্তব্য স্থলে।
আমরাও বেরিয়ে পড়লাম ।
JR ট্রেনে Odawara Station। সেখান থেকে শানতনু রা চলে যাবে ওদের পথে।
আমরা নেবো Hakone Tozan Railway.

Hakone র কথা বলতে গেলে বলতে হয়, ছোট্ট শহর। লোক সংখ্যা সাড়ে তেরো হাজার।
আছে Hot Spring, আছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য , আছে Lakes , MT Fuji ও দেখা যেতে পারে । সব মিলিয়ে এই কতদিনের ঘোরাঘুরির পরে একটু ব্রেক ।

যথারীতি ট্রেন স্টেশনে এসে দাঁড়ালাম । এই কতদিনে বেশ রপ্ত হয়ে গিয়েছে ট্রেন সিস্টেম ।
ফলে অসুবিধা হলো না।
ঘন্টা খানেকের পথ Odawara.
দেখতে না দেখতে চলে এলাম। ওখান থেকে শানতনু দের বিদায় দিয়ে আমরা উঠে বসলাম Hakone Tozan Rail এ। লাল রংয়ের।
মাত্র ১৫ মিনিটের পথ।
একে বেকে পাহাড়ের পাশ ঘেঁষে চলেছে। অপুর্ব সুন্দর দৃশ্য চারিদিকে।
আমাদের গন্তব্য স্থান Hakone-Yumoto station.
এখান থেকে Lake Ashi. যেতে হবে বাসে।
জিগগাসা করতেই মিষ্টি হাসি দিয়ে মহিলা বলল, নিচে যেয়ে বাস নাম্বার H নিয়ে চলে যাও।
যথা সময়ে বাস এসে দাঁড়াতেই আমরা উঠে পরলাম। বাসের অধিকাংশ লোকই টুরিস্ট মনে হলো। সাথে বড় সুটকেস। হয়ত কয়েক দিন থাকবে উপভোগ করবে এখানকার সৌন্দর্য । আমরা এসেছি একদিনের সফরে।
দেখব, উপভোগ করব, চলে যাবো।
বাসটা ধীরে ধীরে পাহাড়ের উপরে উঠছে। চারিদিকে সবুজ গাছের সারি। খাদ নেমে গেছে নিচে। চিকন রাস্তার দুই পাশ দিয়ে গাড়ী আসছে। সময় সময় বাঁকের কাছে একে অপরকে দেখতে পারছে না।
এই দৃশ্য মনের মাঝে গেথে রাখা যাঁয। বোঝানো যায় না।
ধীরে ধীরে নেমে এলো উপর থেকে নিচে।
বাস থেকে নেমে এলাম।সামনে লেক।
কনকনে বাতাস। রুমা আপা আর আমার দুজনের ই কফির তৃষ্ণা।
সামনে একটা কঁফি হাউজ। দুজনে বসলাম।
আমার পকেটের মানিব্যাগ যেখানে ছিল সেখানেই রইল, হাত দিতে হলোনা।
এই ঠান্ডায় এই গরম কফি। আহ!

এসেছি দেখতে ঠান্ডাতে পিছপা হলে চলবে না। এলাম লেকের পাশে। ঠান্ডার জন্য লোকে বোট নিয়ে বের হয়নি। MT, Fuji দেখা যাচ্ছে না, আশাও করিনি।
লেকের পাড় থেকে দেখা যায় দুরের পাহাড় ।
দেখা শেষে এলাম বাস স্টপ এ । এবার H নয়. নাম্বার K নিয়ে এলাম স্টেশনে ।
মনোমোহন একটা দিন কেটে গেলো।

এপ্রিল ১৩, ২০১৯

আজ টোকিওতে আমাদের শেষ দিন। অনেক দেখলাম। স্মৃতির পটে রয়ে গেলো আন্দনমুখর দিনগুলো। যুনেদ, সুহাইয়া, শানতনু, তাসমিয়া দের এই ভ্রমনের পরিকল্পনায় আমরা এসে যোগ দিয়েছিলাম।
বারো জন আর কিউটি টেগোর মিলে উপভোগ করলাম প্রতিটি মুহুর্ত ।

আজ যাবো Tsukiji Fish Market, Emperial Palace আর Sensoji temple দেখতে।
সকালের নাস্তায় আজ ছিল সিদ্ধ ডিম, জেলি , পাউরুটি আর গতকাল চয়ন আপা এনেছিল উনার আত্মিয়ের হাতে বানানো কেক। সাথে রোজি বিয়াইনের বানানো কফি।
এই কতদিনের নাস্তা না বানানোর আলসেমি টা ফিরে যেয়ে পেয়ে না বসলেই হয়।
ওখানে আমাকেই আমারটা বানাতে হবে নচেৎ ——।

দশ টায় আমরা বেড়িয়ে পরলাম। Tsukiji Fish Market এ আসতে খুব একটা বেশি সময় লাগলো না।
জমজমাট মার্কেট। এই বাজার পৃথিবীর বৃহতম Whloesale fish এবং seafood র বাজার। ছোটো ছোটো রাস্তা চলে গেছে ভিতরে। দুই পাশের দোকানে বিক্রি হচছে বিভিন্ন ধরনের মাছের প্যাকেট।
সুসি ও অন্যান্য খাবারের দোকান। আমি, শান্তা, রুমা আপা, জীবন এক সাথে ঘুরছি।
অন্যান্য রা চলে গেছে অন্যদিকে।
ছোট্ট একটা দোকানে ভীড় উপচে পড়ছে।
জানলাম এখানের সুসি বিখ্যাত। অগত্যা লাইনে যোগদিলাম।
সত্যিই সুসির সেই স্বাদ ভুলিবার নয়।
১২:৩০ টা সবাই এসে মিলিত হলাম নিদৃষ্ট জাগায়।
রোজি বিয়াইন কিনেছে অনেক কিছু। চয়ন আপা ও কম যায়নি।
এখান থেকে আমরা ছয় জন চলে গেলাম
Sensoji temple দেখতে। অন্যান্যরা চলে গেলো মিউজিয়ামর উদ্দেশ্যে।

Sensoji temple , অনেক পুরানো Buddhist temple, টোকিওর Asakusa তে।
This temple is dedicated to the Bodhisatva Kannon.
কথিত আছে Sumida River এ দুই জেলে ( দুই ভাই Hinokuma Hamanari এবং Hinokuma Takenari) Kannon র মুর্তি টাকে পেয়েছিল। গ্রামের প্রধান এই মুর্তির পবিত্রতা বুঝতে পেরে নিজের বাসাটাকে নতুন করে তৈরি করে মুর্তি টাকে ওখানে রেখে
বাসাটাকে Temple রুপ দেয়। যাতে করে গ্রামবাসীরা এই মুর্তির পুজা করতে পারে।
এই Temple তৈরি হয়েছিল 645 AD, সেইজন্যই এটা টোকিওর সবচেয়ে পুরাতন Temple.
Temple ঢোকার শুরুতে Thunder Gate. সেখানে বিরাট এক কাগজের লণ্ঠন। লাল, কালো রংএ আঁকা।
এই Thunder Gate থেকে Temple এর চারপাশে আছে Souvenir র দোকান। লোকে কিনছে।
অগণিত মানুষ। পুজা করছে।

বেশ কিছুটা সময় কেটে গেলো এখানে| জীবন, রুমা আপা কিছু Souvenir কিনে নিলো।

শেষ যাবো Emperial Palace দেখতে। এই খানে মিলিত হবো অন্যান্য দের সাথে।
যখন পৌঁছালাম , সময় পাড় হয়ে গেছে। ৪:৩০ মিনিটে বন্ধ হয়ে গেছে । Palace এর চারিধারে ঘোরাঘুরি করে রওয়ানা দিলাম বাসার পথে।

যাওয়ার পথে Tully’s Coffee না খেলেই নয়। রাস্তার ও পাশেই লেখা আছে Tully’s Coffee.
এলাম। রুমা আপা তার পার্স খুললো।

ক্লান্ত সবই। সুটকেস গোছাতে হবে। টেগোর ঘুমিয়ে পরেছে।
সকাল ৭ টায় বের হতে হবে।
আমি আমার দরজা বন্ধ করে দিলাম।
বিদায় টোকিও, বিদায়

Image may contain: tree, plant, sky, outdoor and nature

Continue Reading

জাপানের পথে

                            জাপানের পথে

চোখটা খুলে জানালা দিয়ে আলোর আভাস না পাওয়াতে বুঝতে পারলাম আজও আকাশ গোমরা করে আছে। পাশে রাখা ঘড়িটার দিকে চোখ বুলাতেই দেখতে পেলাম ছোট কাঁটা আটটা ছাড়িয়ে গেছে।
উঠতে হবে।
পেট টা চিন চিন করছে। খিদে না অন্য কিছু বোঝা দায়। তবুও আড়ামোড়া কাটতে ইচ্ছা করলো। কাজে যাওয়ার দায় নেই। আশে পাশে কেউ নেই যে বলবে, উঠো, নাস্তা তৈরি।
অগত্যা কম্বল টা মাথার উপর উঠিয়ে দিলাম।
কোথায় যেন চি চি আওয়াজ হচ্ছে। বুঝতে চেষ্টা করলাম। হঠাৎ মনে হোল ফোন টা নিঃশব্দ সংকেতে দেওয়া আছে, এটা তারই আওয়াজ।
শান্তনুর কল।
এতো ভোরে কল করলে অজানা একটা ভয় শরীরেরে মাঝে খেলে যায়। আজও তার ব্যাতীক্রম হোল না।
এতো ভোরে? সব ঠিক আছে? জিজ্ঞাসা করতেই বলল, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে কিছু করছি কিনা।
বললাম না, কেন বলতো?
জাপান যাবো। ছুটি পেয়ে গেলাম, তাসমিয়ার ছুটি আছে। টেগোরের বছর পূর্তি হোল। তুমি রাজি তো? ও হাঁ , This vacation will be my treat.
এতো গুলো কথা একসাথে বলে একটু চুপ করে রইল আমার উত্তর শোনার জন্য।
মনে পড়ল, কল্পনা বলতো ওদের কে “অনেক কষ্টে তোমাদের কে মানুষ করেছি, যখন আমাদের বয়স হয়ে যাবে তখন তোমরা প্রতি ছয়মাসে আমাদের কে বেড়াতে নিয়ে যাবে দুর দেশে”।
হায়রে কপাল, ভোগ টা শুধু আমি একই করছি।
বললাম, চিন্তা করে দেখি। এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।
আমি এক ঘণ্টা পড়ে কল করবো বলে ফোনটা রেখে দিলো।

জানি যেতে আমাকে হবে। তাই আমিই কল করে জিজ্ঞাসা করলাম, তা কতজন যাচ্ছি?
সব মিলিয়ে বারো জন।
নামের তালিকায় চোখ বুলিয়ে দেখলাম সবাই চেনা পরিচিত। মন্দ না। দিনগুলো কাটবে ভাল।

জাপান যাওয়ার ইচ্ছা আমার অনেক দিনের। আমার নয়, বলব আমাদের ছিল।
একটু দেরী হয়ে গেলো। তাই আজ আমিই যাবো, ওদের সাথে।

প্রথম দিনের কথা থেকে বেশ কয়টা মাস কেটে গেছে।
শান্তনু, জুনায়েদ মিলে ছক কেটে রেখেছে, কোথায় কি কি দেখবো।
প্রথম রাতে টোকিও থেকে পরদিন যাবো Kyoto। সেখানে তিন রাত। সেখানে থেকে ওসাকা। ডে ট্রিপ।
ফিরে আসে টোকিও তে চার রাত।
দুই জাগায় Airbnb ভাড়া করে রেখেছে।
আজ সেই দিন। ছয়টায় প্লেন ছাড়বে।
আমি যাবো আমার বাসা থেকে। শান্তা বলে রেখেছে, সে যাবে আমার সাথে এয়ারপোর্টে।
ইসাক ভাই পৌছে দেবে।
বাক্স এখনো বন্ধ করিনি। কাল রাতে জীবু দুই একটা খাবার জিনিস দিয়ে দিয়েছে। ঐ গুলো ঢোকাতে হবে।
সেই সাথে ঔষধ গুলো আর একবার দেখে নিতে হবে।
এবার উঠি।
পথের অভিজ্ঞতার সাথে কি কি দেখলাম, তার বর্ণনা পরবর্তী তে জানাবো।
সবাই কে কুশল জানিয়ে আজকের মতো
বিদায়।

Continue Reading