জীবন কাহিনী
গুলীর আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেলো স্বপনের। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল, রাত তিন টা। এরকম শব্দ অহরহ শুনতে পায় সে। জানালার পর্দা টা সরিয়ে তাকালও নিচের দিকে। কিছু দেখতে পেলো না। মা পাশের ঘর থেকে ডাক দিলো।
-জানালার কাছে দাঁড়াসনে বাবা। গুলি এসে লাগতে পারে। শুয়ে পড়।
স্বপন রান্না ঘরে এসে এক গ্লাস পানি নিয়ে ফিরে এলো বিছানার কাছে। তাঁর বিছানা বসার ঘরে। এক রুমের বাসাতে মা কে নিয়ে থাকে সে। এই জায়গা টা খুব একটা ভালো না সে জানে। কিন্তু ওরা আর যাবেই বা কোথায়?
কম ইনকাম লোকদের জন্য বানানো বাসা গুলো সিটি তৈরী করেছে স্বপনদের মতো লোকদের জন্য। একটা বিল্ডিং নয়, পনের তালা করে পাঁচটা এই রকম বিল্ডিং। একে বলা হয় প্রোজেক্ট। গ্রাফিটিতে আঁকা সব দালান গুলো। বিল্ডিং এর আশে পাশে আবর্জনায় ভর্তি। মাঝে মধ্যে আলো থাকে না হলওয়ে তে। ভাঙা বাল্বের টুকরো গুলো ছড়িয়ে থাকে এদিকে সেদিকে।
প্রতিদিন পুলিশের গাড়ী আসে। কাউকে ধরে নিয়ে যায়। কাউকে পাশে নিয়ে জিজ্ঞাসা বাদ করে। এ্যাম্বুলেন্সের আওয়াজ শোনা যায় রাতে দিনে।
বাবার মৃত্যু হয়েছে আজ প্রায় তিন বছর হলো। কলেজে ঢুকেছিল সে। পড়া আর হয়নি। সংসারের হাল ধরতে হয়েছে।
চাচা বলে ডাকে, ইমান আলি পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল এক পেট্রোল পাম্পের মালিকের সাথে। আফগানী মালিক। কাজ দিয়েছিল। ভোর পাঁচটা থেকে বিকেল চার টা পর্যন্ত। স্বপন ভেবেছিল, ভালোই হোল, রাতে কোন একটা কলেজে ঢুকে পড়া টা শেষ করবে। সেই মতোই সে আবার সিটি কলেজে ঢুকেছিল। কাজ শেষে চলে যায় কলেজে। ফিরতে ফিরতে রাত বারোটা বেজে যায়। মা না ঘুমিয়ে বসে থাকে।
স্বপন চাদরটা গায়ে টেনে শুয়ে পড়লো। উঠতে হবে আর কিছুক্ষণ পরে। কাজে যেতে হবে। আজ ফিরতে দেরীও হবে। একটা পরীক্ষা আছে। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল, মার ডাকে ঘুম ভাঙল।
-এই খোকা, ওঠ। কাজে যাবি না?
ধড়মড় করে উঠে বসলো স্বপন। তাকালও পাশে রাখা ঘড়িটার দিকে। নাহ, খুব একটা দেরী হয়নি। কাজের জায়গা, হাটা পথ।
-তুই তৈরী হয়ে নে, আমি তোর নাস্তার ব্যবস্থা করছি। বলে মা রান্নাঘরের দিকে গেল।
রান্নাঘর, যে ঘরে দুইজনের বেশি তিনজন দাঁড়ানো যায়না।
কোন কোনদিন খেতে বসে সে মা কে বলে, মা, তোমার খুব অসুবিধা হয়, না মা, এইখানে থাকতে।
-না বাবা, তোর বাবা অনেক কষ্টে এই ফ্ল্যাট টা পেয়েছিল। না পেলে আজ আমাদের পথে পথে থাকতে হতো। মনে নেই, শেষ যেখানে ছিলাম, বাড়ীওয়ালা একদিন এসে বলল, একমাসের মধ্যে এই বাসা ছেড়ে দিতে হবে। তখন যদি সালাম ভাইএর সাথে দেখা না হতো, আজ কোথায় থাকতাম কে জানে। তুই লেখাপড়া শেষ কর, ভালো চাকরি কর, তখন আমরা ভালো বাসা নেবো।
জমিজমা ছিল, মুদির দোকান ছিল চান মিয়াঁর। সচ্ছল সংসার।
সন্ধ্যার পর, দোকানের বাহিরে পাতা বেঞ্চে বসে আড্ডা চলতো। কেউ পান চায়, কেউ বা চায় চা। অনেকের হাতে থাকে না পয়সা। তাই বলে চান মিয়াঁ তাকে চা খাওয়া থেকে বঞ্চিত করে না। খাতার পাতায় লিখে রাখে।
একদিন এই আড্ডার মাঝে রহিম মিয়াঁ বলেছিল, শুনে এলাম আমেরিকা যাওয়ার জন্য নাকি দরখাস্ত চাচ্ছে। লটারি হবে।
চান মিয়াঁ প্রথমে গা করে নি। এক রাতে বাসায় আসতেই আয়েশা বলেছিল, ঝুমুরের মা বলছিল, ঝুমুরের বাবা নাকি কি সব কাগজ পত্র পাঠিয়েছে, আমেরিকা যাবে বলে। তুমিও পাঠাও না কাগজ পত্র।
প্রতি রাতেই একি বিষয় নিয়ে ঘ্যানর-ঘ্যানর করে আয়েশা।
অবশেষে বলতে গেলে বিরক্ত হয়েই চান মিয়াঁ কাগজ পত্র পাঠিয়ে দিয়েছিল। ক্রমশ ভুলেও গিয়েছিল ব্যাপার টা।
হঠাৎ একদিন ডাকহরকরা এসে একটা বড় খাম দিয়ে গেলো চান মিয়াঁ কে।
এপাশ ওপাশ উল্টাল। আস্তে আস্তে খুললো চিঠিটা। কিছুই বুঝতে পারলো না প্রথমে। জমির আলি বসে ছিল বেঞ্চে।
-দেখি আমাকে দাও। বলে চিঠি টা হাতে নিয়ে দেখল। পড়লো।
চান মিয়াঁ তুমি তো ডিভি লটারি পেয়েছ। আমেরিকা যাওয়ার। উচ্ছ্বাসিত ভাবে বলে উঠলো জমির আলি।
সে যে মনে প্রানে চেয়েছিল, তা নয়। শুধু আয়েশার ঘ্যানঘ্যানির জন্যই করতে হয়েছিল।
আনন্দ আয়েশার, আনন্দ স্বপনের।
চান মিয়াঁ হিসাব করতে বসল। কিছু জমি বিক্রি করে দিতে হোল। দোকান টা খালাতো ভাই মজনুর হাতে দিয়ে, বাড়ীটা ওরই তত্ত্বাবধানে দিয়ে একদিন পাড়ি দিলো চান মিয়াঁ আমেরিকার উদ্দেশে।
আসার আগে জমির আলিই আলাপ করিয়ে দিয়েছিল ওরই এক দুঃসম্পর্কে আত্মীয় আবিরের সাথে, থাকে নিউ ইয়র্কে।
বলেও ছিল, কয়েকটা দিনের জন্য তোমার কাছে রেখো।
সেই আবিরই জোগাড় করে দিয়েছিল কাজ টা সেভেন-ইলেভেনে। রাতের শিফটে কাজ করতো। ফাঁকি কাকে বলে তা জানতো না চান মিয়াঁ। মালিকের নজরে পড়েছিল খুব তাড়াতাড়ি। রাতের শিফটের ম্যানেজার করে দিয়েছিল।
নতুন একটা বাসা ভাড়া নিয়ে যাবার সময় আবিরকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল, তোমার ঋণ আমি কোনদিন শোধ করতে পারবো না আবির।
সেই বাসাতে ছিল বেশ কিছু বছর। স্বপনের স্কুলের কাছেই ছিল ডানকিন-ডোনাটের দোকান। ওখানেই স্কুল শেষে কয়েক ঘণ্টা কাজ করতো সে। হাত খরচ টা চলে যেতো। বাপের কাছে চাইতে হতো না। হঠাৎ একদিন বাড়ীওয়ালা বলেছিল এই বাড়ী বিক্রি করে দিচ্ছে। তাদের কে উঠে যেতে হবে। মাথায় বাজ ভেঙে পড়েছিল চান মিয়াঁর। কোথায় পাবে আর একটা বাসা। তখন সালাম ভাই এই বাসার সন্ধান দিয়েছিল।
প্রথম প্রথম আয়েশার ভালো লাগেনি জায়গাটা। চারিদিকে তাকালে ভিতরে একটা ভয় ভয় ভাব আসে। সে কথা বলেছিল স্বামীকে।
চান মিয়াঁ রেগে বলেছিল, মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছ, সেই শোকর করো, আশপাশে তাকিওনা। এতো কম ভাড়ায় আর কোথায় পাবে বাসা।
কাজের দূরত্ব টা একটু বেশি, যেতে প্রায় এক ঘণ্টা লেগে যেতো। স্বপনেরও কাজটা চলে গেলো। নতুন স্কুলে নতুন করে মিলে মিশে চলতে চাইল। কিছু কিছু ছেলেরা ওকে বিরক্ত করতো। মাঝে মাঝে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতো।
একদিন স্কুল শেষে ফেরার পথে হ্যালো,হ্যালো বলে কে যেন ডাকছে বলে মনে হোল স্বপনের। পিছন ফিরে তাকালও।
উচু, স্বাস্থ্যবান এক ছেলে। হাতে বই। কোনদিন দেখেছে বলে মনে পরে না।
এগিয়ে এসে বলল তাঁর নাম, টম। হাতের পেশী গুলো দেখলেই মনে হয় ব্যায়াম করে। স্বপনের বুকটা দুড়দুড় করছিল। এখনি একটা চড় থাপ্পড় মারবে।
না, সে তা করলো না। নাম জিজ্ঞাসা করল। স্বপন তাঁর নাম বলতেই বলল থাকো কোথায়? স্বপন বলল তাঁর ঠিকানা।
-ও, আমিও ওখানেই থাকি।তোমার দুই ক্লাস উপরে পড়ি। আমার বিল্ডিং তোমার দুটো বিল্ডিং পরে। কাল স্কুলে যাওয়ার সময় আমার সাথে যাবে।
টম তাঁর কথা রেখেছিল। স্বপনকে সাথে নিয়ে স্কুলে গিয়েছিল। যারা ওকে উত্যক্ত করতো, তারা তাকিয়ে দেখল। আর কোন দিন ওরা ওকে বিরক্ত করেনি।
ইদানিং আয়েশা খেয়াল করে চান মিয়াঁ মাঝে মাঝে উদাসীন হয়ে বসে থাকে। কি যেন ভাবে।
আয়েশা জিজ্ঞাসা করেছিল, এত কি ভাবো?
উত্তরে চান মিয়াঁ বলেছিল, জানো স্বপনের মা, এদেশ কে আমি আপন করে নিতে পারলাম না। আমার সেই ছোট্ট দোকান তাকে আমি খুব মিস করি। সেই সন্ধ্যার আড্ডা এখানে কোথায় পাবে। শুধু কামড়ে পরে আছি ছেলেটার জন্য। ওর ভবিষ্যৎ এর দিকে চেয়ে। একদিন বড় হবে সে। এখানকার মত লেখাপড়া তো দেশে পাবে না। বড় ডিগ্রী নিয়ে বের হবে। বড় চাকরি করবে। তখন ওই তোমাকে দেখবে।
-কেন? আপনি কোথায় যাবেন? বালাই ষাট, আপনি থাকবেন আমাদের সাথে। যতদিন আমি আছি। বলে আয়েশা রান্নাঘরের দিকে গেলো চা আনতে।
এখনো মাঝ রাতে স্বপনের মা র ঘুম ভেঙে যায়। মনে পরে সেই রাতের কথা। ঝনঝন করা ফোনের শব্দ। লাফ দিয়ে উঠে ফোন টা ধরেছিল স্বপন।
-ইজ ইট চান মিয়াঁজ রেসিডেন্স? এক মেয়ের গলা।
-ইয়েস?
-আই এম কলিং ফ্রম হসপিটাল? চান মিয়াঁ হ্যাজ এ স্ট্রোক। কাম কুইক। হাসপাতালের নাম টা দিলো মেয়েটা।
আয়েশা প্রথমে কিছুই বুজতে পারানি। স্বপন বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়লে সে।
-এখন তো কান্নাকাটি করলে চলবে না মা। চলো তাড়াতাড়ি হাসপাতালে যেতে হবে।
আয়েশার চোখে এখনো ভাসে চান মিয়াঁর অসাড় দেহটা। চোখ মেলে চেয়ে আছে তাঁর দিকে, কথা বলতে পারছে না। কি যেন বলতে চাইছে সে।
তারপর আর বেশিদিন ছিলনা চান মিয়াঁ। সব কিছুর বন্ধন কাটিয়ে চলে গেল। রেখে গেলো দুটো অসহায় মানুষ কে।
কলেজ থেকে ফিরতে সেদিন বেশ দেরীই হয়েছিল স্বপনের। দুই একটা বন্ধু জুটেছে। তাদের সাথে বসে চা সিগারেট টানতে টানতে বেশ কিছুটা সময় চলে গিয়েছিল। বিল্ডিং এর কাছে এসে দেখল চার পাঁচ টা ছেলে সিঁড়িতে বসে কি যেন করছে। দুজনের হাতে ছোট কাগজে মোড়া পুঁটলি। স্বপনের বুঝতে বাকি রইল না ওই পুটলির মধ্যে কি? ও ওদের সাথে চোখে চোখ না করে দরজাটা খুলতে যেয়ে দেখল দরজা খোলা। হল ঘরের বারান্দা টা অন্ধকার। দুটো ছেলে কোনায় দাড়িয়ে কি যেন করছে। এলিভেটরের বোতাম টা টিপ দিলো। বারো তালা থেকে আস্তে আস্তে নেমে আসছে। স্বপনের মনে হোল আজ ইচ্ছে করে এলিভেটর টা দেরী করছে। স্বপনের বুকটা ধুকধুক করছে।
অন্ধকারে দাঁড়ানো ছেলে টা ডাক দিল স্বপন কে।
স্বপন ডাক টা উপেক্ষা করতে চাইলো।
ছেলে টা পাশে এসে দাঁড়ালো। তাকালও স্বপনের দিকে।
-ইউ ইগনোরিং মি? রাইট? চোখ দুটো জবা ফুলের মতো লাল ছেলে টার।
এলিভেটর পাঁচ তালায় এসে দাড়িয়ে আছে।
-আই ডিডনট হেয়ার ইউ। শুকনো গলায় বলল স্বপন।
-ডু ইউ হ্যাভ মানি? একটা দুর্গন্ধ নাকে এসে লাগলো স্বপনের। মনে মনে সে আয়াতুল কুরসি পড়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু বার বার ভুল হয়ে যাচ্ছে।
-অনলি টু ডলার। বলে বের করতে যাবে তখনি পোঁ পোঁ করে পুলিশের গাড়ীর আওয়াজ শুনতে পেলো।
ছেলেটা দৌড় দিয়ে দরজাটা টান দিয়ে খুলে মিলিয়ে গেলো রাস্তায় । আর ঠিক সেই সময় এলিভেটর টা এসে দাঁড়ালো নিচ তালায়।
মা জেগে ছিল।
-আজ আর খাবো না মা, বলে বিছানায় শুয়ে পড়লো স্বপন। বুকের ধুকধুকানি তখনো যায় নি।
সকালে কাজে যাওয়ার পথে দেখতে পেলো পাশের বিল্ডিং এর নিচে জটলা। তিনটা পুলিশের গাড়ী। কিছুটা জায়গা হলুদ ফিতে দিয়ে ঘেরা। জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলো গতরাতে একজনের মরা দেহ পড়েছিল ওইখানে। কপালে গুলির চিহ্ন।
স্বপনের মনে পড়লো গত রাতের কথা। এই মৃতদেহ তারও হতে পারতো। গা টা কাঁটা দিয়ে উঠল।
সরে এলো সেখান থেকে।
এখনো দুই সেমিস্টার বাকি। তারপর গ্রাজুয়েসন। ভালো একটা চাকরি পেয়ে মা কে নিয়ে এই বিল্ডিং ছেড়ে চলে যাবে। আর নয়। দিন দিন চারিদিকের পরিবেশ টা খারাপের দিকে যাচ্ছে। সব সময় একটা আতংক স্বপনের মনে।
একদিন কাজের ফাকে বসে পড়াশুনা করছিল। একটা মার্সেডিজ এসে দাঁড়ালো পাম্পের কাছে। গাড়ী থেকে নেমে লোক টা এসে দাঁড়ালো স্বপনের কাছে। পঞ্চাশ ডলারের একটা নোট বের করে স্বপনের হাতে দিতে যেয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল স্বপনের মুখের দিকে।
-আর উ সপান?
-ইয়েস। বাট হাও উ নো মাই নেম? অবাক হয়ে ডলার টা ক্যাশ বাক্সে রাখতে রাখতে বলল।
-উওর ড্যাড ইউজ টু ওয়ার্ক ইন মাই স্টোর। সাচ এ নাইস গাই। হি শোড মি ইওর পিকচার। আই এম রিচার্ড।
স্বপন কোনদিন দেখেনি রিচার্ড কে। নাম শুনেছিল বাবার কাছ থেকে। শুনেছিল এত ভালো লোক বলে আর হয় না। বাবা খুব প্রশংসা করতো রিচার্ডের।
পকেট থেকে বিজনেস কার্ড বের করে দিয়ে বলেছিল কোন প্রয়োজন হলে তাকে কল করতে।
দরকার পড়েছিল স্বপনের। যেদিন রাতে বাড়ী ফিরে ঘরে ঢুকে মা কে দেখতে না পেয়ে। ছোট্ট এক চিলতে ঘরে মা আর কোথায় লুকিয়ে থাকবে। চিৎকার করে কয়েক বার ডাকল মা কে। সারা শরীর হীম শীতল হয়ে এলো। দরজার বাহিরে এসে ডাকল।
পাশের এপার্টমেন্টের দরজা খুলে এক বয়স্ক মহিলা বেড়িয়ে এলো। তার পিছনে মা দাড়িয়ে।
স্বপন স্তম্ভিত।
মা বেড়িয়ে এসে স্বপনকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে উঠল।
-কি হয়েছে। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে জিজ্ঞাসা করল।
-ওরা এসেছিল।
-কারা?
-তিনটা ছেলে। দড়াম দড়াম করে দরজায় বাড়ি মারছিল। কি কি যেন বলছিল, আমি কিছুই বুজতে পারিনি। ওরা চলে গেলে আমি পাশের দরজায় যেয়ে ধাক্কা দিতেই মহিলা দরজা খুলে আমাকে টেনে ভিতরে নিয়ে গেলো। আমি আর এখানে থাকবো না বাবা। তুই একটা কিছু কর। বলে স্বপনকে জড়িয়ে ধরলও।
স্বপন কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারলো না। তবে নিশ্চিত এখানে আর নয়।
মনে পড়ল রিচার্ডের কথা। পরদিন কল করলো।
সব শুনে রিচার্ড বলেছিল তার একটা বাসা আছে। সেই বাসার বেজমেন্ট টা খালি পরে আছে। গুছিয়ে নিতে হবে। যৎ সামান্য কিছু দিলেই হবে। আরও বলেছিল, তোমার বাবা আমার পুরো বিজনেস টা দেখে রেখেছিল আর আমি তোমাদের জন্য এই টুকু করতে পারবো না?
তারপর মাকে আর জেগে থাকতে হয়নি। মা নিশ্চিন্তে মনে ঘুমায়। স্বপন মাঝ রাতে ফিরে ঢাকা দেওয়া খাবার গরম করে নেয়। তারপর সেও নিশ্চিন্ত মনে ঘুমিয়ে পড়ে।
–
–