এক অসমাপ্ত গল্প (শেষ পর্ব)
আকাশ ভেঙ্গে জল ঝরছে। আনন্দ জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখছিল। লাবন্য আর আমেনা এসেছে আজ চার মাস হয়ে গেলো। কি ধুমধাম করেই না ওরা গিয়েছিল এয়ারপোর্টে ওদেরকে আনতে। সু, দীপ, রেজ, বৌমা গল্পে মেতে গিয়েছিল লাবন্যর সাথে। লাবন্যকে বুঝতে দিলোনা সে নতুন কোন জাগায় এসেছে। লাবন্যও মিশে গিয়েছিল ওদের সাথে। আমেনার চোখে জল। আমেনা বলেছিল,” দাদা এতো সুন্দর করে ওদেরকে মানুষ করেছিলে কি ভাবে?”। প্রতি উত্তরে আনন্দ বলেছিল,”কৃতিত্ব তার, আমার নয়”।
সানন্দা বাসাতে ছিল ওদেরকে অভ্যর্থনা করার জন্য। খাওয়া শেষে বলেছিল আমেনাকে “ এবার তুমি বুঝে নাও। আমার শেষ, তোমার শুরু”।
“তাতো হবার নয়। আমি তার বোন, তুমি তার বন্ধু। তুমি যা দিতে পারবে আমি তা দিতে পারবো না। তোমার সাথে কথা বলে তার যে আনন্দ, আমার সাথে তা সে পাবেনা। কাজেই তোমার ছুটি নেই, বোন”।
আজ হঠাৎ করে কেন এসব মনে পড়ছে আনন্দ জানেনা।
“কি ভাবছ কাকুমনি?”
লাবন্য দাড়িয়ে। আনন্দ তাকাল ওর দিকে। খুব সুন্দর করে সেজেছে। বৌমা,সু মিলে শিখিয়েছে কোন রং এর সাথে কোন রং যাবে।
“কোথায় যাবে?”
“দীপ ভাইয়া, সু আর ভাবী আসবে নিতে। আটলানটিক সিটি তে যাবো। তুমি কি ভাবছ”?
সে কথার উত্তর না দিয়ে আস্তে করে ওর কপালের চুল টা সরিয়ে দিলো আদর করে।
ওর মুখটার দিকে তাকিয়ে মনে পড়ল মহীউদ্দীনের কথা। মেয়েটাকে সে দিয়ে গেছে তার হাতে। এ যে কত বড় দায়ীত্ব আনন্দ ছাড়া আর কেউ জানেনা। মানুষ করে দিয়ে যেতে হবে ওকে। তুলে দিতে হবে ভাল পাত্রের হাতে। আনন্দের কতটুকু সময় আছে সে নিজেও জানেনা। ওর জন্য একটা ফান্ড খুলেছে বাঙ্কে। আনন্দের অবর্তমানে দীপ আর সু র উপর দায়ীত্ব দিয়েছে দেখাশুনা করার।
দীপ আর সু বলেছিল,” তোমার এই হার্ট ব্রেকীং কথা বার্তা একটু থামাবে?”। সানন্দাও তাতে যোগ দিয়েছিল। আমেনা অন্য দিকে তাকিয়ে শাড়ীর আঁচল দিয়ে চোখ দুটো মুছেছিল।
সু র চীৎকার শুনে আনন্দ ফিরে তাকাল। চীৎকার লাবন্যর সাঁজ দেখে। “ অপূর্ব লাগছে দেখতে। খুব সুন্দর হয়েছে”,
বলে আনন্দের কাছে এসে বলল,” কেমন আছো আব্বু?”।
“ ভাল, কখন ফিরবে?”।
“রাত হবে, লাবন্য আমাদের বাসায় থেকে যাবে”। বলে আমেনার কাছে চলে গেলো।
কথা শেষে ওরা উঠে গেলো গাড়ীতে। আনন্দ তাকিয়ে থাকলো। গাড়ীটা মোড় নিতেই আনন্দ ফিরে তাকিয়ে দেখল আমেনা পাশে দাড়িয়ে।
“বলবি কিছু?”
“তুমি বেশি আস্কারা দিচ্ছ মেয়েটা কে’?
“ ভাবিস না। এদেশে থাকলে এদেশের মতো করে মানুষ করতে হবে। কিছুটা ছাড়তে হবে আবার কিছুটা টানতে হবে”।
“ তুমি যা ভাল বোঝ তাই কর”।
“ সানন্দা আসবে না আজ?” জিজ্ঞাসা করল আনন্দ
“আসবে, একটু দেরী হবে বলেছে”। বলে আমেনা চলে গেলো রান্না ঘরের দিকে।
বাহিরে বৃষ্টি। তবুও জানালাটা একটু খুলে দেবে ভাবল। ঘরটা গুমট হয়ে রয়েছে। তাপমাত্রা আজকে নব্বই এর উপরে যাবে। জানালাটা খুলতে যাবে ফোন টা বেজে উঠল। ফ্লরেন্তার ফোন। অনেকদিন ওর সাথে কথা হয়নি আনন্দের।
হ্যালো বলতেই ফ্লরেন্তা কল কল করে উঠল। মনে হোল তার মন আজ আনন্দে ভরপুর।
“কি ব্যাপার? খুব মুডে আছো মনে হচ্ছে?”
“ সত্যি তাই। একজনের সাথে ডেটিং করছিলাম অনেকদিন ধরে। মনের মত। গতকাল সে প্রপজ করেছে”।
“কনগ্রাচুলেশন! তা সে ভাগ্যবানটা কে?”
“দেখা হয়েছিল আমার এক বান্ধবীর পার্টিতে”।
“ আমি সত্যিই খুব খুশি হয়েছি। শুভদিনটা জানিও। অবশ্যই যাবো”। বলল আনন্দ।
কথা শেষে জানালাটা খুলে দিলো। বৃষ্টিটা কমে এসেছে।
কখন যে আমেনা এসে পাশে দাঁড়িয়েছে খেয়াল করেনি আনন্দ। “ কিছু বলবি?”
“ কে ফোন করেছিল?”
“ ফ্লরেন্তা, মনে আছে তোকে বলেছিলাম, লন্ডনে থাকে। ওকে প্রপজ করেছে ওর ফীয়ান্সে”।
“একটা কথা বলি দাদা” “বল”
“ কয়েক দিন থেকে দেখছি তুমি বুকের বা পাশটা হাত দিয়ে চেপে ধরে রাখো। কেন”?
“ ওসব নিয়ে তোর চিন্তা করতে হবেনা।“ বলল আনন্দ
“ আমি সানন্দা দি আর সু কে বলব ভাবছি। যদি কিছু করতে পারে তবে তারাই পারবে”।
আর একটা কথা আছে।
কি?
“একটু চিন্তা করে দেখবে কি? অনেক দিন তো হোল”।
আনন্দ তাকাল আমেনার দিকে। কিছু বলল না।
ডি অ্যান্ড জে আবার ভরে উঠেছে কোলাহলে। রাশেদ ছাড়াও আরও দুজন যোগ দিয়েছে এই ফার্মে। ডেভিড একদিন আনন্দকে ডেকে নিয়ে বলেছিল ,” এবার আমার গুছানোর পালা। রিটায়ার করব ভাবছি। জেনীফারও চাচ্ছে অবসর নিয়ে বাকি দিন গুলি একসাথে ঘুরে বেরিয়ে কাটিয়ে দিতে”।
আনন্দ জিজ্ঞাসা করেছিল, “ কবে নেবে। চিন্তা ভাবনা করছো কিছু ?”
“খুব তাড়াতাড়ি। তুমি কিছু ভাবছ কি”?
না, উত্তর দিয়ে ছিল আনন্দ। “ জানি বয়স অনেক হোল। সব ছেড়ে দিলে বুড়ীয়ে যাবো তাড়াতাড়ি। আজকাল বাহিরে একেলা যেতে ভরসা পাইনা। দুটো স্টেনট লাগানো। যদি কিছু হয় তবে এখানেই হোক। বাহিরে কিছু হলে টানা হেঁচড়া করবে কে?”
কথা ওখানেই শেষ হয়েছিল।
তিন টা বছর চলে গেলো জীবনের খাতা থেকে। কত কিছুই ঘটে গেলো। লাবন্য চলে গেছে হোস্টেলে। ডেভিড অবসর নিয়ে বাস করছে ফ্লোরিডায়। দীপ আর সু র পরিবারে যোগ হয়েছে দুটো কীউটি পাই।
ডেভিডের ফেয়ারওয়েল পার্টি হয়েছিল খুব ধুমধাম করে। সবাই এসেছিল। এসেছিল বেলাল-কল্যানী, এমিলির বাবা,মা, এসেছিল জনের মা। আনন্দ বলেছিল সবাইকে। ওদের মধ্যে দেখেনি কোন হিংসাত্মক ভাব। ডেভিড সবাই কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিল সে যা পেয়েছে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিছু নয়।
এক অলস বেলায় আনন্দ বসেছিল Drawing রুমে। নতুন একটা বই দিয়েছে তার বন্ধু ফেরদৌস। সেই বই এর মধ্যে ডুবে ছিল। অন্ধের কাহিনী। জন্মান্ধ। পৃথিবীর সৌন্দর্য সে দেখেনি। নিজে তৈরী করে নিয়েছে। সে দেখেনি সুন্দরের পাশে অসুন্দর। অপূর্ব লেখা।
কলিং বেলটা বেজে উঠল। একটু বিরক্তই হয়েছিল আনন্দ। এই ভঁর দুপরে কে এলো?।
আমেনা দরজাটা খুলে বলল,” এসেছ, এসো”। মনে হোল যে এসেছে তাকে সে আসা করছিল।
আনন্দ তাকাল। Drawing রুম থেকে দেখা গেলনা। জিজ্ঞাসা করল,” কে এসেছে আমেনা?”
“সানন্দা দি”।
সানন্দা, এই সময়?
“কেমন আছো?” বলে এসে দাঁড়াল সে।
“ এই ভঁর দুপুরে?”
“কেন? আসতে নেই? এসেছি আমেনার সাথে গল্প করতে”।
আনন্দ হাসল। সানন্দা চলে গেলো আমেনার ঘরে।
আনন্দ বইটা উঠিয়ে নিলো চোখের সামনে।
“দাদা”।
ডাক শুনে তাকাল আনন্দ। আমেনা আর সানন্দা সামনে দাড়িয়ে। মনে হোল কি যেন হয়েছে। হাসি হাসি মুখ নয়। আনন্দের বুকটা ধক করে উঠল।
“ কি কিছু বলবি?”
“হা। লাবন্যর ব্যাপারে”।
“ কি হয়েছে ওর?”
“একজন কে তার পছন্দ। তবে–”।
“ কে সে?”
“এদেশি” ভয়ে ভয়ে বলল আমেনা। “ আমেরিকান”।
“তা অসুবিধাটা কোথায়? যদি উদার মন হয়। আমার মেয়েকে ভালবেসে সুখী রাখতে পারে সারা জীবন, তাহলে আমার কোন আপত্তি নেই”।
ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল আমেনার। ভেবেছিল আনন্দ রাজি হবেনা। যদিও সানন্দা বলেছিল,” দেখো, তোমার দাদা আপত্তি করবেনা যদি ছেলে ভালো হয়”। সানন্দা আজ এসেছিল শুধু আমেনাকে সাহস দেওয়ার জন্য। কথার জের টেনে সে আমেনার দিকে তাকিয়ে বলল,” তোমার দাদাকে বলেছ যে ছেলে মুসলমান হতে রাজি আছে”। আমেনা মাথা নেড়ে সাই দিলো। আনন্দ দুজনের দিকে তাকিয়ে হেসে বলল,” তোমার মেয়েকে বলো, ওকে একদিন ডিনারে নিয়ে আসতে। সু,দীপ,রেজ বৌমা কেও ডেকো। যদিও জানি ওরা সবই জানে”। একটু থেমে বলল,” এক কাপ কফি নিয়ে আয় আমার জন্য”। আমেনা যাওয়ার আগেই সানন্দা বলল,” তুমি বিশ্রাম নাও আমি বানিয়ে আনছি”।
বইটা সরিয়ে রেখে আনন্দ কফির কাপে চুমুক দিলো। সানন্দা সামনে বসা।
“ কিছু বলবে?”
“ কার্ডিওলজীস্টের সাথে এপয়েন্টমেন্ট করেছি আগামীপরশু সকাল দশটায়। আমি নিয়ে যাবো”।
আনন্দ জানে এখানে দর কষাকষি করে লাভ নেই। অগত্যা মাথা নেড়ে সাই দিল। বলল,” এই ভাবে আর কতদিন ঠেকা দেবে।“
“আল্লাহ যতদিন আমাকে দিয়ে করতে দেয় ততদিন করে যাবো”। বলে খালি কফির কাপটা হাতে নিয়ে উঠে গেল রান্না ঘরের দিকে।
আরও একটা বছর কোথা দিয়ে চলে গেলো। লাবন্যর বিয়ের কথা বার্তা চলছে। মাঝে মাঝে সু, দীপ বিচ্ছু দুটোকে রেখে যায় আনন্দের কাছে। ওরা আনন্দকে ঘোড়া বানিয়ে পিঠে চড়ে খেলা করে। আমেনা হাসে। আনন্দ ভুলে যায় সব কিছু।
সেদিন আমেনাকে ডেকে আনন্দ বলেছিল,” তুই কি জানিস সানন্দা কোথায়? বেশ কিছুদিন হোল সে কলও করে না আসেও না। আমি কল করেছিলাম, উত্তর নাই”।
“ না জানিনে তো,” বলে তাড়াতাড়ি অন্য ঘরে চলে গিয়েছিল।
বেলা পড়ে এসেছে। পশ্চিমের আকাশ টা লাল রংএ ছেয়ে গেছে। আনন্দ বাহিরে Deckএ বসে চোখ বূজে রবীন্দ্র সংগীত শুনছিল আর ভাবছিল, কত কিছুই না দেখল সে। এমিলি, জন চলে গেলো। ফ্লরেন্তা পেলো নুতন জীবন। ছোট্ট বোবা মেয়েটাও কোথায় হারিয়ে গেলো। মহীউদ্দীনের সেই হাসিতে উদ্ভাসিত উজ্জ্বল মুখ। আর সবশেষে সানন্দা। হাঁ, সানন্দা, ভাবনাটা শেষ হলনা। ডাক শুনতে পেলো।
“কেমন আছো?”
আনন্দ তাকাল। সানন্দা। “ এতদিন কোথায় ছিলে?”
সানন্দা সে কথার উত্তর না দিয়ে তাকিয়ে রইল আনন্দের মুখের দিকে। কি যেন বলতে চাইছে।
“কিছু বলবে?”
“ভাবছি কথাটা কীভাবে বলব। সহজ ভাবে বলার নয়”।
“ তা নাইবা বললে”। বলল আনন্দ।
“ বলতে আমার হবেই। আর সেই জন্যই এই কদিন তোমার সামনে আসেনি। সাহস সঞ্চয় করছিলাম। আজ তোমার সামনে এসে সেই সাহস আমি হারিয়ে ফেলেছি , আনন্দ দা”।
“নির্ভয়ে বলো”।
“আমি চলে যাচ্ছি, আনন্দ দা, আমি চলে যাচ্ছি নিউইয়র্ক ছেড়ে”।
স্ল্যাইডিঙ্গ ডোরের ওপাশ থেকে ভেসে এলো আমেনার কান্নার ফুঁপানো শব্দ।
আনন্দ চেয়ে রইল সানন্দার দিকে। বুকের মাঝটা খালি হয়ে এলো। মনে হোল অনেক কিছু সে হারিয়েছে জীবনে, আজ আবারও কি যেন সে হারাতে চলেছে।
অবিশ্বাসের সুরে জিজ্ঞাসা করলো, “ কোথায়”?
“ডালাসে, আমার বোনদের কাছে”। বলে চোখ মুছলো ওড়নার আঁচল দিয়ে।
কিচ্ছুক্ষণ চুপ করে থেকে আনন্দ বলল,” তুমি তো জানো, আমার জীবনটা ছিল আনন্দে ভরপুর, সে তার সব কিছু উজাড় করে দিয়েছিল আমায়। মাঝ পথে এসে একদিন দেখলাম সে নেই। খুঁজেছি তাকে পর্বতের শিখর চুড়ায়। আবার ফিরে এসেছি চার দেয়ালের মাঝে। খুঁজেছি ঘরে ঘরে। খুঁজেছি ধু ধু মাঠের প্রান্তে যেখানে সবাই ঘূমায়ে। অস্থিরতা আমাকে পেয়ে বসেছিল। সেই সময় তুমি কোথা থেকে এসে সেই ভেসে যাওয়া নৌকাকে পাড়ে নিয়ে এলে। তোমার সাথে গড়ে উঠল এক অমঘ বন্ধুত্ব। যা ভাঙ্গার নয়। আমি চেয়েছিলাম এক কথা বলার সাথী। তুমি এলে সেই কথা বলার সাথী হয়ে। তুমি বলেছিলে,” সে হারিয়ে যায়নি আনন্দ দা। তোমার পাশে পাশেই আছে। আমাকে দেখো, আমিতো বেচে আছি সন্তানদের আঁকড়ে ধরে। তোমাকেও বাঁচতে হবে”। সেই থেকে তুমি ছিলে আমার পাঁশে।
মনে পড়ে? তোমার বাসায় ডিনার শেষে তুমি বলেছিলে, “এক টুকরো মাছ আছে, দিয়ে দেবো”? সে দেওয়া তো আজও থামেনি, শুধু দিয়েই গেলে, নিলেনা কিছু”। বলে আনন্দ থামল।
“ না,তুমি আমাকে দিয়েছ অনেক, তুমি আমাকে শিখিয়েছ, কি ভাবে কথা বলতে হয়। যে আমি দু মিনিটের বেশি কারো সাথে কথা বলতে পারতাম না, সেই আমি তোমার সাথে ঘণ্টা ধরে কথা বলি, সে তো তোমারই দান, আনন্দ দা। তুমি বলতে, আমি জেনো কখনো নিজেকে ছোট না ভাবি, বলতে, কখনো বলবে না তোমার কোন গুন নেই। এযে কত বড় প্রেরনা তুমি আমাকে দিয়েছিলে তা তুমি বুঝবে না আনন্দ দা, তা তুমি বুঝবে না। দূরে গেলেও আমি তোমারই পাশে আছি জেনো। আমি যত দূরেই থাকি না কেন তোমার আমার বন্ধুত্ব চিরদিন অটুট থাকবে আনন্দ দা”।
আনন্দ সানন্দার চোখের দিকে তাকিয়ের রইল, কি জেনো খুজছে সে, বলল,”জানি তোমাকেও কোথাও যেয়ে আজ ঠাই নিতে হবে। তোমারও তো চুলে পাক ধরল। অনেক তো করলে। এবার পাখা গুটিয়ে বসার সময়। আমার জন্য ভেবো না। আমি বাঁচবো, আমি বাঁচবো ওই কিউটি পাঁই দুটোকে বুকে আগলে ধরে, ওদের নানা দাদা ডাক শুনে। ওদের মাঝেই আমাকে বাঁচতে হবে সানন্দা, ওদের মাঝেই আমাকে বাঁচতে হবে। ওর রক্ত রয়েছে ঐ দুটো নিষ্পাপ শিশুর মাঝে। ওরাই আমাকে পথ দেখাবে, ওদের মাঝেই আমি খুজে পাবো তাকে, ওদের মাঝেই আমি খূজে পাবো”। আনন্দের গলার স্বর ভাঙ্গা।
সানন্দা আনন্দের হাতটা চেপে ধরল। কান্না ভরা গলায় বলল,” কথা দাও, নিজের দিকে খেয়াল রাখবে? ঔষধ গুলি খেতে ভুলবে না? আমার মাথার দিব্যি রইল”। টপ টপ করে চোখের জল পড়লো ওর হাতের পরে।
“কথা দিলাম”।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। আকাশে তারার ঝিলিমিলি। দূরে ঝিল্লির ডাক। জোনাকি পোকারা তাদের আলো জ্বালিয়ে ঘুরছে চারিদিকে। নিস্তব্ধ অন্ধকার। তার মাঝে চাপা কান্নার শব্দ। সানন্দা কাদছে। আনন্দ জল ভরা চোখে তাকিয়ে আছে দূরে বহু দূরে।
সমাপ্ত।
4 Comments
চোখ ভিজে গেলো।অসাধারন। কিছু বলার নেই।
Excellent.l think those cute pie is helping to Anondo to make him happy and may be this is the right way to find his life back. Thank you Anondo.
অসাধারন।বাকরুদ্ধ হয়ে এসেছে।বার বার চোখ মুছতে হচ্ছে।কোনকিছু লেখার ভাষা আমার জানা নেই।
Excellent ending.Anando may be in right track to find his happiness.May Allah bless Anando.Many many well-wishing for Anando.