২৭শে এপ্রিল
আজ ডায়রির পাতায় অন্য কাউকে নিয়ে নয় লিখব আজ আমাকে নিয়ে।
আমার অনুভূতি টা আমি ব্যক্ত করতে চাই।
লিখব কারন আমার মনটাকে আমি হাল্কা করতে চাই।
আমি কাঁদতে পারিনা, আমি কাঁদতে চাই।
আজ সেই দিন যেদিন সে চলে গিয়েছিল, সেদিন দাড়িয়ে দাড়িয়ে আমি শুধু দেখেছিলাম। কিছুই করতে পারিনি। আমি সেদিন কিছু একটা মিরাকেল ঘটবে ভেবেছিলাম। দৌড়ে যেয়ে ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম,” মিরাকেল ঘটে, তাঁই না”?
সে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল কিছুক্ষণ।
বলল, আমার পঁয়ত্রিশ বছরের ডাক্তারির অভিজ্ঞতায় মিরাকেল কি জানা নেই, মিরাকেল ঘটেনি, ঘটবেনা।
তুমি অন্যান্য যা যা করার সেই ব্যবস্থা করো।
তোমরা কখনও হিমশীতল শরীরে হাত রেখেছ কি? অনুভব করেছ কি ঠাণ্ডার তীব্রতা? আমি করেছি। আমি দেখেছি কি ভাবে জীবনের সব লেনদেন শেষ হয়ে যায়। নেমে আসে অন্ধকার।
দাড়াও, ঘরের জানালা গুলো খুলে দেই । গুমোট ঘরটা আমাকে অস্থির করে তুলেছে। আমি বাতাস চাই। বুক ভরে নিশ্বাস নিতে চাই।
সে শুধু রেখে গেলো অনেক অনেক ভালবাসার স্মৃতি।
আনাচে কানাচে।
দু দুটো বছর। আমি অনেক ঘুরলাম। অনেক জাগায় গেলাম। খুজে পেতে চাইলাম সেই শব্দ টাকে। যেটা লেখা থাকে বই এর পাতায়।
শান্তি, হা শান্তি।
কোথায় সে লুকিয়ে আছে? আমার জানতে ইচ্ছা করে। জানতে ইচ্ছা করে তার অস্তিত্ব আছে কি না।
যদি থেকেই থাকে তবে কেন আজও আমি হেটে বেড়াই মাঝ রাতে। ঘরের চৌকাঠ পেড়িয়ে এসে দাড়াই ব্যালকণিতে।
নীস্তব্দ চারিদিক।
তাকিয়ে থাকি দূরে লাল নেওন সাইন টার দিকে।
ওটা নিভছে জ্বলছে।
ওটা কেনও নিভে যায়না। তাহলে তো ওকে পুড়তে হবে না।
প্ল্যানচেট করে যদি একবার নিয়ে আসি, যদি তা সত্যি হয়, জিজ্ঞাসা করবো, “ তুমিও কি কাঁদো? নাকি তোমাদের তা করতে নেই।
তুমি কি “উহ উহ” করো যখন তেলের ছিটে পরে আমার হাতটা পুড়ে যায়।
নাকি শুধু দাড়িয়ে থেকে দেখো।
চোখ দিয়ে জল ঝরে, কিছু করতে পারনা, তাঁই ।
সেই যে বলতে, রান্নার কাজ তোমার দাড়া হবেনা।
আবারও বলবে কি?
জানি তুমি তা বলবে না। আগের মত পাশে এসে দাড়ও কি না, জানিনা।
যত্ন করে রাখা সাজানো বালিশ টা চেপে ধরে কাঁদো কি না।
জানিনা।
জানিনা, খোলা জানালা দিয়ে যে বাতাস এসে দুলিয়ে দিলো পর্দা টা সেকি তুমি।
আমি জানিনা।
দেখেছ কি ঘুনে ধরা কাঠ। আস্তে আস্তে ওর ভিতর টাকে কুড়ে কুড়ে খেয়ে নেয়। শেষে একদিন ঝরে পড়ে।
আমি দেখেছি সেই কাঠ। দেখেছি সতেজ মসৃণ কাঠ টার মাঝে কালো কালো দাগ। মসৃণতা হারিয়ে গেছে। তবু সে দাড়িয়ে থাকে।
কতদিন থাকবে এইভাবে?
কাঠ টা জনেনা। শুধু জানে ভাঙ্গন ধরেছে তার গায়ে।
মনে পড়ে, প্রথম দেখা,
সুতীর শাড়ী পড়া।
চোখে কাজল, কপালে লাল রঙের টিপ। চোখের কাজল ঢেকে যায়নি সাদাটে রঙের চশমাতে।
ঠোঁটে হাসি।
বলেছিলাম, এই হাসি অন্য কারো জন্য নয়, শুধু আমার।
হাটতে যেয়ে যে ছন্দে দুলে উঠত ওর শরীর সেতো শুধু আমিই দেখেছিলাম।
এই সব স্মৃতি ভাবতে যেয়ে চোখে জল এলো। মনে হোল বলি, তুই কেনও বাহিরে এলি।
হয়তো এই চোখটা ছিল আমার সুখ সৃষ্টির নীড়। আজ এই কষ্টের ভিড় সইতে পারলনা।
রাত হোল। পাশাপাশি দুই বালিশ পাতা বিছানা ডাকছে আমায়। মনে পড়ে অনেক আগে পড়েছিলাম।
“ যখন ঘুম আসে,তখন স্বপ্ন আসে
যখন স্বপ্ন আসে। তখন তুমি আসো
আর যখন তুমি আসো, তখন ঘুম আসেনা”।
ঘুম হারিয়ে গেছে অনেক আগে, আজ খুলে রাখব জানালা টা, হয়ত বা আসবে সে।
4 Comments
অনুভূতির সুন্দর প্রকাশ। ভাষা নেই কিছু বলার।যতবার পড়লাম ততবার কাঁদলাম। চেষটা কর এর মাঝেই ভালো থাকার।
আজ সারাদিন ধরে একটা কান্না বুকের মধ্যে গুমরে গুমরে উঠছিল তোমার লেখাটা পড়ে সেটা আর ধরে রাখতে পারলাম না ছোটদা।
সুন্দর অনুভুতির প্রকাশ। যে এই কাহিনি পরবে সেই কাঁদবে , কোন কিছু বলার ভাষা নাই।
দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনাকে শান্তি দান করেন।
Pathetic writing. I am speechless when l read the writing. Monta kaste vore galo. Tomar e kosto kamabar kono path amader kase nei.Shudhu bolbo sob kosto par hoye tumi jeno santir path khuje pao.Ar emon kore likho na.Amader je boro kosto hay.May Allah help you.