কালো বিড়াল

কান্নার শব্দে ঘুম ভেংয়ে গেলো কবীরের। পাশে রাখা ঘড়িটার দিকে তাকালও।
রাত তিনটা।
মিসকালো ঘর।
কান্নার শব্দ নেই।
ভাবল, হয়তো স্বপ্ন দেখছিল। কম্বল টা মাথার উপর টেনে পাশ ফিরল সে।
গলাটা শুকিয়ে আসছে। কম্বল টা মাথার উপর থেকে সরিয়ে অন্ধকারে পাশে রাখা পানির বোতল টা হাত দিতেই মেঝে তে পড়ে গেলো।
ধুত্তোর, বলে কম্বল টা আবার মাথার উপর টেনে নিলো। ঘুম টা চলে যাওয়ার আগেই আবার ওটাকে জড়িয়ে ধরতে হবে। এই ভেবে চোখ টা বুঝল সে।
না কান্নার শব্দ নেই তবেঁ কে যেন তার কম্বল টা টানছে মনে হোল।
হিস হিস শব্দ।
ভয়ে হীম হয়ে এলো কবীরের শরীর। মাথার কম্বল সরে গেছে। চোখ খুলতে চাইলো না সে।
টুং করে শব্দ হোল।
কি যেন মেঝে তে পড়ে গড়িয়ে চলেছে। থেমে গেলো শব্দ টা।
ভয়ে ভয়ে চোখ খুলে চাইল কবীর।
অন্ধকার টা সয়ে এলো। বিছানা থেকে নামতে যেয়ে হোঁচট খেলো পড়ে যাওয়া পানির বোতলের সাথে।
আলো টা জ্বালালও।
মেঝেতে কিছুই দেখতে পেলনা।
দরজা খুলে বেড়িয়ে এলো।
নিচের তালায় আলো জ্বলছে।
মনে করতে পারলো না রাতে উপরে উঠার আগে আলোটা নিভিয়ে ছিল কিনা।
অ্যালার্ম টা অফ করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলো।
টিভি টা চলছে।
শব্দ নেই।
হাল্কা একটা হওয়া বয়ে গেলো মনে হোল কবীরের কাছে।
উপরে তাকাল সে।
ফ্যান টা বন্ধ।
গা টা শিরশির করে উঠল।
Sliding door টা খুলতে যেয়ে থমকে দাঁড়াল কবীর।
বাহিরে জ্বালানো অল্প আলোতে দেখতে পেলো এক কালো কুচকুচে বিড়াল ।
বসে আছে।
চোখ টা জ্বলজ্বল করছে।
কবীরের মনে হোল বিড়াল টা ওর দিকে তাকিয়ে, কি যেন বলতে চাইছে।
হঠাৎ করে দৌড়ে এসে Sliding door এ খামছা মারলও।
মাউ মাউ করে কয়েক বার ডেকে আবার পিছিয়ে যেয়ে তাকিয়ে রইল কবীরের দিকে ।
এই বিড়াল টাকে সে আগে দেখেনি।

বাহিরে বড় রেড ম্যপেল গাছ টা হঠাৎ দুলে উঠলো। এক ঝলক ঝোড়ও হাওয়া গাছটাকে দুলিয়ে দিয়ে চলে গেলো।
ঘুমন্ত পাখি গুলো কিচিমিচি শব্দ করে উড়ে গেলো অন্ধকারের মাঝে।
ভৌতিক রাত মনে হোল কবীরের কাছে।

পাশের বাড়ীর বাহিরের আলো টা আজ কেনও নিভানো বুঝতে পারলনা কবীর।
ওরা কি নেই বাড়ীতে?
Sliding door টা খোলার সাহস হোল না কবীরের।
পিছন ফিরতেই বিড়াল টা আবারও আছড়ে পড়লো Sliding door এর উপর।
আর ঠিক সেই মুহূর্তে সব আলো গুলো নিভে গেলো।
বাহিরে অন্ধকার। ভিতরে অন্ধকার।
শুধু জ্বলজ্বল করছে দুটো চোখ।
পিছন ফিরে হাটতে যেয়ে কফি টেবিলে আছাড় খেলো।
উহ! করে পড়তে পড়তে আবার উঠে দাঁড়াল কবীর।
ঢং করে বেজে উঠল মাস্টার ক্লক টা।
জানিয়ে দিলো রাত সাড়ে তিনটা।
কবীরের গলা শুকিয়ে এলো।
অন্ধকারে হাতড়িয়ে চলতে যেয়ে হাতটা পড়লো পিয়ানোর উপর।
ঝনঝন করে বেজে উঠল ।
কবীর ভয়ার্ত চিৎকার করে পিছিয়ে এলো।
শীতের রাতেও ওর সর্ব শরীরে ঘামের কনা।
আলোটা ফিরে আসছে না কেনও ভাবতে যেয়ে মনে হোল কে যেন ওর পিঠের উপর হাত রেখেছে।
কে?
বলে পিছন ফিরতেই হাতটা সরে গেলো মনে হোল, কালো কুচকুচে অন্ধকারে কিছুই দেখতে পেলনা।
শুধু দেখতে পেলো জ্বলজ্বলে দুটো চোখ তাকিয়ে আছে ওর দিকে।


You may also like

6 Comments

  1. ওয়াও!পড়তে পড়তে ভয়ে আমার গা শিরশির করে উঠেছে।খুব খুব ভালো লিখেছো!!!

  2. গল্পটা শেষ করছো না কেন?শেষ কর।অপেক্ষায় আছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *