জাপানের পথে

                            জাপানের পথে

চোখটা খুলে জানালা দিয়ে আলোর আভাস না পাওয়াতে বুঝতে পারলাম আজও আকাশ গোমরা করে আছে। পাশে রাখা ঘড়িটার দিকে চোখ বুলাতেই দেখতে পেলাম ছোট কাঁটা আটটা ছাড়িয়ে গেছে।
উঠতে হবে।
পেট টা চিন চিন করছে। খিদে না অন্য কিছু বোঝা দায়। তবুও আড়ামোড়া কাটতে ইচ্ছা করলো। কাজে যাওয়ার দায় নেই। আশে পাশে কেউ নেই যে বলবে, উঠো, নাস্তা তৈরি।
অগত্যা কম্বল টা মাথার উপর উঠিয়ে দিলাম।
কোথায় যেন চি চি আওয়াজ হচ্ছে। বুঝতে চেষ্টা করলাম। হঠাৎ মনে হোল ফোন টা নিঃশব্দ সংকেতে দেওয়া আছে, এটা তারই আওয়াজ।
শান্তনুর কল।
এতো ভোরে কল করলে অজানা একটা ভয় শরীরেরে মাঝে খেলে যায়। আজও তার ব্যাতীক্রম হোল না।
এতো ভোরে? সব ঠিক আছে? জিজ্ঞাসা করতেই বলল, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে কিছু করছি কিনা।
বললাম না, কেন বলতো?
জাপান যাবো। ছুটি পেয়ে গেলাম, তাসমিয়ার ছুটি আছে। টেগোরের বছর পূর্তি হোল। তুমি রাজি তো? ও হাঁ , This vacation will be my treat.
এতো গুলো কথা একসাথে বলে একটু চুপ করে রইল আমার উত্তর শোনার জন্য।
মনে পড়ল, কল্পনা বলতো ওদের কে “অনেক কষ্টে তোমাদের কে মানুষ করেছি, যখন আমাদের বয়স হয়ে যাবে তখন তোমরা প্রতি ছয়মাসে আমাদের কে বেড়াতে নিয়ে যাবে দুর দেশে”।
হায়রে কপাল, ভোগ টা শুধু আমি একই করছি।
বললাম, চিন্তা করে দেখি। এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।
আমি এক ঘণ্টা পড়ে কল করবো বলে ফোনটা রেখে দিলো।

জানি যেতে আমাকে হবে। তাই আমিই কল করে জিজ্ঞাসা করলাম, তা কতজন যাচ্ছি?
সব মিলিয়ে বারো জন।
নামের তালিকায় চোখ বুলিয়ে দেখলাম সবাই চেনা পরিচিত। মন্দ না। দিনগুলো কাটবে ভাল।

জাপান যাওয়ার ইচ্ছা আমার অনেক দিনের। আমার নয়, বলব আমাদের ছিল।
একটু দেরী হয়ে গেলো। তাই আজ আমিই যাবো, ওদের সাথে।

প্রথম দিনের কথা থেকে বেশ কয়টা মাস কেটে গেছে।
শান্তনু, জুনায়েদ মিলে ছক কেটে রেখেছে, কোথায় কি কি দেখবো।
প্রথম রাতে টোকিও থেকে পরদিন যাবো Kyoto। সেখানে তিন রাত। সেখানে থেকে ওসাকা। ডে ট্রিপ।
ফিরে আসে টোকিও তে চার রাত।
দুই জাগায় Airbnb ভাড়া করে রেখেছে।
আজ সেই দিন। ছয়টায় প্লেন ছাড়বে।
আমি যাবো আমার বাসা থেকে। শান্তা বলে রেখেছে, সে যাবে আমার সাথে এয়ারপোর্টে।
ইসাক ভাই পৌছে দেবে।
বাক্স এখনো বন্ধ করিনি। কাল রাতে জীবু দুই একটা খাবার জিনিস দিয়ে দিয়েছে। ঐ গুলো ঢোকাতে হবে।
সেই সাথে ঔষধ গুলো আর একবার দেখে নিতে হবে।
এবার উঠি।
পথের অভিজ্ঞতার সাথে কি কি দেখলাম, তার বর্ণনা পরবর্তী তে জানাবো।
সবাই কে কুশল জানিয়ে আজকের মতো
বিদায়।

You may also like

4 Comments

  1. জাপানের বিভিন্ন জায়গা সম্পর্কে জানতে পারবো এটা ভেবে খুব ভালো লাগছে।

  2. জাপানের সাথে আমাদের যোগাযোগ অনেক দিনের, তাই তোমরা যাবে শুনে ভাল লাগছে। জাপান একটা অসাধারণ দেশ, এদের নিজস্ব সংস্কৃতি আর সভ্যতা আছে। উচ্চ প্রযুক্তির এই যুগে যাতায়াত ও যোগাযোগ সহজ হয়েছে, কিন্তু মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে।তোমার দেখার চোখ আছে, আশা করি তুমি অনেক কিছু দেখতে পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *